দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কী। ছবি: সংগৃহীত।
রাতে স্কিপিং, জগিং এবং সাইকেল চালিয়ে, জল ও খাবার না খেয়ে ওজন কমানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন কুস্তিগির বিনেশ ফোগাট। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ফলে প্যারিস অলিম্পিক্সে মহিলাদের কুস্তিতে ৫০ কেজি বিভাগের ফাইনালে লড়তে পারেননি তিনি। এখন কথা হল, এক রাতের মধ্যে ওজন কমানো কি সম্ভব? ক্রীড়াবিদেরা দ্রুত ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন রকম ফর্মুলা মেনে চলেন ঠিকই, কিন্তু রাতভর লেবু-মধুর জল বা কালো কফি খেয়ে অথবা শরীরচর্চা করলেও সেই অর্থে ওজন কমবে না। অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক গ্রাম ওজন কমাতে এই পদ্ধতি ভাল কাজ করে। কারণ, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত জল অপসারণ করা সম্ভব। কিন্তু যদি অনেকটা ওজন কমাতে হয়, তা হলে এই পদ্ধতি কার্যকর নয়।
ওজন কমাতে লেবু-মধুর জল খান অনেকেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস এবং মধু দিয়ে খাওয়া ভাল এতে কোনও সন্দেহই নেই। লেবু ‘ডাইইউরেটিক’, শরীর থেকে অতিরিক্ত জল ও টক্সিন বার করে দেয়। লেবুতে পেকটিন ফাইবার থাকে। এক ফোঁটা মধু দিয়ে লেবুর জল ওজন কমাতে পারে। মধু খেলে বিপাকক্রিয়া ভাল হয়। দ্রুত ক্যালোরি কমে। কিন্তু গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থাকলে লেবু-মধুর জল বেশি খাওয়া ঠিক নয়। অনেকেরই অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা থাকে। সে ক্ষেত্রে খালি পেটে লেবুর জল খেলে অম্বল বেড়ে যেতে পারে।
কফি খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল না খারাপ, তা নিয়ে অনেক মতামতই আছে। তবে বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে যে, কফি হার্টের অসুখ, টাইপ টু ডায়াবিটিস, এমনকি কিছু ক্যানসারের ঝুঁকিও কমাতে পারে। তবে দিনে ঘন ঘন কফি খেলে তার উল্টো প্রভাব পড়তে পারে। কফিতে থাকা ক্যাফিন উত্তেজক হিসাবে কাজ করে এবং মস্তিষ্কে ‘অ্যাড্রেনালিন’ এবং ‘কর্টিসল’-এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। এর ফলে উদ্বেগ বাড়তে পারে, ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্যাফিন হৃদ্স্পন্দন এবং রক্তচাপও বাড়াতে পারে।
ওজন কমানোর সবচেয়ে ভাল উপায় হল শরীরচর্চা। হাঁটা, দৌড়নো, জগিং বা ওজন তোলা, যোগাসন ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদে মেদ ঝরাতে পারে। শরীরচর্চা করার নিয়ম আছে, তা সময় মেনে করতে হয়। প্রশিক্ষকেরা বলেন, কেবল শরীরচর্চাই নয়, সেই সঙ্গে সুষম আহার, পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি। দ্রুত ওজন ঝরাতে চাইলে সন্ধ্যা ৭টা-৮টার মধ্যে রাতের খাবার খেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, রাতের খাওয়া এবং ঘুমোতে যাওয়ার সময়ের মধ্যে যেন অন্ততপক্ষে ৩ ঘণ্টার ব্যবধান থাকে। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে রাতের খাবারে প্রোটিন এবং ফাইবার রাখতে হবে বেশি করে। শোয়ার আগে কফি না খেয়ে এক গ্লাস হালকা গরম জল খেলে হজম সংক্রান্ত সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই টোটকা বিপাকহার বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে। রাতে পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি।