জিম করতে গিয়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল অভিনেতা সিদ্ধান্ত সূর্যবংশীর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
৪৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন অভিনেতা সিদ্ধান্ত সূর্যবংশী। সূত্রের খবর, জিমে শরীরচর্চা করতে করতে আচমকাই লুটিয়ে পড়েন অভিনেতা। কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। অভিনেতার পরিবারের তরফ থেকে কিছু না জানা হলেও সূত্রের খবর, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার। এর আগে জিম করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল কৌতুকশিল্পী রাজু শ্রীবাস্তব ও অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লর। কেন বার বার জিম করতে গিয়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ?
শরীরচর্চা প্রশিক্ষক সুমনা দত্ত বর্মণের কথায়, ‘‘আপনি রোজ নিয়ম করে শরীরচর্চা করছেন মানেই যে আপনি ফিট, সেই ধারণা ভুল।” এমন হতেই পারে হার্টের রোগ আপনার শরীরে চুপিসারে বাসা বেঁধে রয়েছে। যত ক্ষণে জানতে পারছেন, তখন অনেকটাই দেরি হয়ে যাচ্ছে। প্রশিক্ষক বলেন, “জিমে ভর্তি হওয়ার আগে প্রশিক্ষকদের খুলে বলতে হবে, আপনার শারীরিক কোনও অসুস্থতা আছে কি না। ইদানীং অনেক জিমেই ভর্তির আগে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয়। বিশেষ করে কোভিড-পরবর্তী সময়ে প্রত্যেক ছ’মাস অন্তর সব রকম মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর বিষয়ে আমরা বার বার জোর দিয়ে থাকি। কোভিড-পরবর্তী সময়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই আমাদের স্বাস্থ্য নিয়ে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। জিম করার সময় অতিরিক্ত ঘাম হলে, শ্বাসকষ্ট হলে, বুকে ব্যথা হলে দেরি করা চলবে না।”
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদের মতে, ‘‘বংশে যদি হৃদ্রোগের ইতিহাস থেকে থাকে, বা নিজের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, কোলেস্টেরলের সমস্যা বা হার্ট সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকে, তবে শরীরচর্চার সময় বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।” বিশেষ করে ওজন নিয়ে শরীরচর্চা করার সময় অনেক বেশি সতর্ক থাকা জরুরি। শুরুতেই কঠোর শরীরচর্চা না করে ধীরে ধীরে ব্যায়ামের সময় বাড়াতে হবে। শরীরকে সময় দিতে হবে মানিয়ে নেওয়ার। যাঁর যেমন ক্ষমতা সেই অনুযায়ী শরীরচর্চা করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ, “যদি দেখেন আগে যে ব্যায়ামগুলি করার সময় সহজে হাঁপাতেন না, কিন্তু এখন সেই একই ব্যায়াম করার সময়ই হাঁপ ধরছে, তা হলে দ্রুত চিকিৎসকরের পরামর্শ নিন।’’ ইমরান আরও বলেন, ‘‘জিম করতে গিয়ে কেউ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলে সময় অপচয় করা একেবারেই চলবে না। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ২ থেকে ৩ ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তা ছাড়া এই সময় ৩০০ মিলিগ্রাম অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। এই ওষুধের প্রভাবে রোগী খানিকটা আরাম পাবেন।’’