Malaria Vaccine

ম্যালেরিয়া নাশ করতে পারে একটি প্রোটিন! টিকা আবিষ্কারের পথে ভারতীয় গবেষকেরা

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) গবেষকরা দাবি করেছেন, এমন এক ভ্যাকসিন ক্যানডিডেটের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যা ম্যালেরিয়ার জীবাণুকে সমূলে নাশ করবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৪ ১৬:২৪
Share:

জেএনইউ-এর দুই অধ্যাপক (বাঁ দিকে) শৈলজা সিংহ এবং আনন্দ রঙ্গনাথন ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধকের খোঁজ পেয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।

ম্যালেরিয়া যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না।

Advertisement

এর আগেও ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক তৈরি হয়েছিল, তবে তেমন লাভ হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ফলাও করে জানিয়েছিল, ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক এসে গিয়েছে। এ বার মারণ অসুখের প্রকোপ কমে যাবে। আদতে তা হয়নি। প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরামকে যেন কিছুতেই বাগে আনতে পারছে না কোনও প্রতিষেধক। কিন্তু এ বার আরও এক আবিষ্কারের পথে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) গবেষকেরা দাবি করেছেন, এমন এক ভ্যাকসিন ক্যানডিডেটের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যা ম্যালেরিয়ার জীবাণুকে সমূলে নাশ করবে। গবেষণা চলছে।

আইসায়েন্স বিজ্ঞান পত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে। জেএনইউ-এর মলিকিউলার মেডিসিন বিভাগের দুই অধ্যাপক শৈলজা সিংহ এবং আনন্দ রঙ্গনাথন এমন এক উপাদানের খোঁজ পেয়েছেন, যা ম্যালেরিয়ার পরজীবীকে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধতে বাধা দেবে। গোড়া থেকেই রুখে দেবে সংক্রমণ।

Advertisement

ম্যালেরিয়ার কোপে প্রতি বছর বিশ্বে চার লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। বিশেষ করে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া এক প্রকার মহামারীর চেহারা নিয়েছে। শয়ে শয়ে শিশুমৃত্যু নাড়া দিয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী মহলকে। ভারতেও এর প্রকোপ কম কিছু নয়। বর্ষা আসতে চলেছে বাংলায়। এখন ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার উপদ্রব বাড়বে।

কী থেকে হয় ম্যালেরিয়া?

স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা কামড়ালে তার লালার সঙ্গেই আমাদের শরীরে ঢোকে ম্যালেরিয়ার জীবাণু। ম্যালেরিয়ার বাহক পরজীবী চার রকম— প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স, প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম, প্লাসমোডিয়াম ওভিলি এবং প্লাসমোডিয়াম ম্যালেরি। তাদের মধ্যে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরামের আক্রমণেই হয় প্রাণঘাতী ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া। বর্ষাকাল বলে শুধু নয়, ম্যালেরিয়া হানা দিতে পারে যে কোনও সময়েই।

ভারতীয় বিজ্ঞানীরা কী আবিষ্কার করেছেন?

অধ্যাপক শৈলজা সিংহ, অধ্যাপক আনন্দ রঙ্গনাথন এবং তাঁদের টিম এমন এক রিসেপটর প্রোটিনের খোঁজ পেয়েছেন, যা ম্যালেরিয়ার পরজীবীকে মানুষের শরীরে ঢুকে বংশবিস্তার করতে সাহায্য করে। সাধারণত, ম্যালেরিয়ার পরজীবী মশার লালার মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে রক্তস্রোতে বয়ে গিয়ে সোজা পৌঁছয় যকৃতে। সেখানে বংশবিস্তার করে মেরোজয়েট দশায় পৌঁছয়। তার পর সরাসরি ধাক্কা দেয় লোহিত রক্তকণিকাকে। সেখানেও একটা জীবনচক্র শুরু হয় ম্যালেরিয়ার জীবাণুর। তারা দ্রুত সংখ্যায় বাড়তে থাকে। একটা সময় লোহিত রক্তকণিকার দেওয়াল ফাটিয়ে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। যে নির্দিষ্ট প্রোটিনের সাহায্যে এই জীবাণুরা মানুষের শরীরের সুস্থ কোষগুলিকে সংক্রমিত করে সেই প্রোটিনটিকে আলাদা করে চিহ্নিত করেছেন জেএনইউ-এর গবেষকরা। এর উদ্দেশ্য হল, ওই প্রোটিন দিয়েই ভ্যাকসিন বানিয়ে ম্যালেরিয়ার পরজীবীদের মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে বাধা দেওয়া।

গবেষকরা বলছেন, ওই প্রোটিন নিয়ে গবেষণা চলছে। খুব তাড়াতাড়ি আরও উন্নত মানের ম্যালেরিয়ার টিকা বানিয়ে ফেলা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement