ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ক্যানসারের যোগ রয়েছে? ছবি: সংগৃহীত।
ফ্যাটি লিভার দু’রকম। অ্যালকোহলিক ও নন অ্যালকোহলিক। মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান থেকে লিভারে চর্বি জমলে তা অ্যালকোহলিক ফ্যাট। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রটি মূলত খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত, তেল, ফ্যাট জাতীয় উপাদান বেড়ে গেলে হয়। কখনও কখনও নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার বংশগত কারণেও হতে পারে। সময় মতো সতর্ক না হলে এই ফ্যাটি লিভারের হাত ধরেই হানা দিতে পারে লিভার সিরোসিস। তবে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ফ্যাটি লিভারের কারণে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও। মলাশয়, কিডনি, মূত্রাশয় কিংবা জরায়ুর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি বা ফ্যাট জমতে শুরু করলে এই অঙ্গটি তার নিজস্ব কার্যক্ষমতা হারাতে শুরু করে। শরীরে জমা দূষিত পদার্থ বা ‘টক্সিন’ থেকে লিভার নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে না। রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে সেই দূষিত পদার্থ অন্ত্রে পৌঁছে যায়। প্রাথমিক ভাবে সেখান থেকেই প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন শুরু হয়। ২০২২ সালে সুইডেনের একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, নন অ্যালকোহল-রিলেটেড ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তদের মধ্যে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ১২.১৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল হেল্থ ইনসিয়োরেন্স সার্ভিসের একদল গবেষক এই বিষয়টি নিয়ে আবার গবেষণা করেন। তাঁরা জানান, যাঁরা অ্যালকোহল বা মদ পান করেন, তাঁদের মধ্যে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সাধারণ মানুষের চেয়ে ২.৬০ শতাংশ বেশি।
ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ক্যানসারের যোগ কোথায়?
মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় খান না, কিন্তু ফ্যাটি লিভারের সমস্যা রয়েছে— এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, তাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরই স্থূলত্ব রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যা অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলে লিভারে প্রদাহজনিত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এমনকি, লিভার বিকল হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধরনের ফ্যাটি লিভার থেকে সিরোসিস, হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আবার, অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলে তা খাদ্যনালি, পিত্তথলি, ফুসফুস, থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যানসার কিংবা লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে।