ভরা শীতে টক দই খেতে চান না অনেকেই। প্রতীকী ছবি।
সারা বছর খাওয়ার পাতে দই খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। রান্নাতেও ব্যবহার করেন কেউ কেউ। আবার দুধের বিকল্প হিসাবেও খান অনেকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে টক দইয়ের বিকল্প নেই।
শরীরে শক্তি বাড়াতে যেমন কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট দরকার, তেমনই খেয়াল রাখতে হবে খাবারের মধ্যে যেন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমপরিমাণে থাকে। দ্বিতীয় মস্তিষ্ক বলা হয় শরীরের অন্ত্রকে। আর অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে পারলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়। এর মূল কারণ প্রো বায়োটিক।
সামনে শীতকাল আসছে। ভরা শীতে টক দই খেতে চান না অনেকেই। শীতকালে দই খেলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে ভেবেই টক দই খাওয়া বন্ধ করে দেন। সত্যিই কি শীতকালে টক দই খেলে কোনও সমস্যা হতে পারে?
শীতকাল পড়লেই এমনিতেই জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে। এ সময়ে রোগের সঙ্গে লড়তে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা জরুরি। রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করে তোলে কয়েকটি খাবার। সেই তালিকায় অন্যতম টক দই। এই দইয়ে প্রোবায়োটিক উপাদান ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়ামও থাকে। শীতকালে হাড় ভাল রাখতে দই খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্যালশিয়াম সবচেয়ে উপকারী উপাদান। এ ছাড়া গ্যাস-অম্বল, পেট ফাঁপা, গ্যাসের মতো সমস্যা দূর করতেও টক দইয়ের ক্ষমতা অপরিসীম। এ ছাড়া, দইয়ে রয়েছে ভিটামিন বি ১২ এবং ফসফরাস। শরীরের অন্দরে ঘটে চলা আরও অনেক সমস্যার নিমেষে সমাধান করে টক দই।
শীতকালেও মেপে টক দই খাওয়া যেতে পারে। প্রতীকী ছবি।
শীতকালে টক দই খেলে সর্দি-কাশি হতে পারে, এই ধারণা ঠিক নয় বলেই মনে করেন চিকিৎসকরা। কারণ শীতকালে দই খাওয়ার সঙ্গে ঠান্ডা লাগার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং দই খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, শীতকালেও মেপে টক দই খাওয়া যেতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি বিকেল ৫টার মধ্যে দই খাওয়া যায়। ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে আলাদা কথা। সে ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর দই এড়িয়ে যাওয়া ভাল। ঠান্ডা লাগবেই তার কোনও মানে নেই। তবে আগে থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। বিশেষ করে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে সচেতন থাকাই ভাল।
তবে শীতকালে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা দই বার করে খেলে সমস্যা হতে পারে। সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। তাই শীতকালে দই খেতে হলে খাওয়ার অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে বার করে নিন। দইয়ের ঠান্ডা ভাব কেটে গেলে তার পর খান। এটি ছাড়াও শীতকালে দই খাওয়ার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখুন।
১) দুপুরে খাওয়ার পরে এক বাটি দই খেয়ে নিন। সকালের জলখাবারেও রাখতে পারেন এই দই। রাতের খাবারে দই না রাখলেই ভাল।
২) শুধু দই খেতে না চাইলে মরসুমি কিছু ফল দিয়ে একটি স্মুদি বানিয়ে নিতে পারেন।
৩) সকালে ওট্স খান? তা হলে দই দিয়েও খেতে পারেন। ওজনও বাড়বে না। শীতে সুস্থ থাকবে শরীরও।