ক্যানসারের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি হল রেডিয়োথেরাপি বা রেডিয়েশন থেরাপি। ক্যানসারের ধরনের উপরে ভিত্তি করেই চিকিৎসকেরা রেডিয়োথেরাপির পরামর্শ দেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতের ৬৭ শতাংশ রোগীর ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে রেডিয়োথেরাপির সাহায্য নেওয়া হয়। তবে এই একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও এই থেরাপি নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন রয়েছে রোগীদের মনs। যেমন ক্যানসারের কোন পর্যায়ে রেডিয়োথেরাপির প্রয়োজন হয়? এই পদ্ধতি কি যন্ত্রনাদায়ক? রেডিয়োথেরাপি কি পারে ক্যানসারকে সমূলে বিনাশ করতে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির অ্যাপোলো হসপিটালের কনসালটেন্ট, রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট চিকিৎসক তনবীর সাহিদ।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, “রেডিয়েশন থেরাপিতে রোগীরা এখনও অনেক ক্ষেত্রেই ভয় পান। কিন্তু প্রথমেই বলে রাখা ভাল যে এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগীর দেহে কোনও ব্যথা হয় না। বলা যায়, অনেকটা এক্স-রের মতো। এবং রোগীর অবস্থার উপরে নির্ভর করে তবেই কোর্সের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়। এই থেরাপির মূল লক্ষ্য থাকে রোগীর দেহের ক্যানসারযুক্ত কোষগুলিকে বিনাশ করা।”
অনেক চিকৎসকের মতেই রেডিয়েশন থেরাপি হল ক্যানসারের একটি আদর্শ চিকিৎসা পদ্ধতি। যেটি প্রায়শই কেমোথেরাপি বা শল্য চিকিৎসার মতো অন্যান্য থেরাপির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে রেডিয়োথেরাপির মাধ্যমে কি শরীরের ভাল কোষগুলিরও ক্ষতি হতে পারে? উত্তরে চিকিৎসক তনবীর জানাচ্ছন, “অনেক ক্ষেত্রে রেডিয়েশন থেরাপির ফলে স্বাস্থ্যকর কোষের ক্ষতি হয় ঠিকই, তবে সেটি স্থায়ী হয় না। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পয়েন্টগুলিকে লক্ষ্য করেই এই থেরাপি প্রয়োগ করা হয়। পাশাপাশি, ক্যানসার নয়, এমন কোষগুলি রেডিয়েশন থেরাপি থেকে নিজেকে পুনরুদ্ধার করতে পারে।”
ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে রেডিয়োথেরাপি ব্যবহার করা যায়। যেমন, শেষ পর্যায়ের ক্যানসারের লক্ষণ কমাতে, ক্যানসারের প্রধান চিকিৎসা হিসেবে, অস্ত্রোপচারের আগে কোনও টিউমারের আকার কমাতে, অস্ত্রোপচারের পরে অবশিষ্ট ক্যান্সার কোষকে নির্মূল করতে ইত্যাদি।
রেডিয়োথেরাপির কি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে? এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক তনবীর জানাচ্ছেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলেও তা অত্যন্ত কম। এবং যেখান থেকে সংশ্লিষ্ট রোগী সহজেই নিজেকে সুস্থ করে তুলতে পারেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর সঙ্গে আলোচনা করা হয়। যেমন ওজন কমে যাওয়া, মুখ শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। যদিও এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলির ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। এবং পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করার উপদেশ দেন।
চিকিৎসক মনে করেন যে, ক্যানসার প্রতিকারের রোগীর মনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সফল চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট রোগীর মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ পরিত্যাগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের কাছে রয়েছে সেই সমস্ত সুবিধা যা একজন ক্যানসার রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন।
এই প্রতিবেদনটি অ্যাপোলো হাসপাতাল কলকাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।