প্যাকেট শুধু খোলার অপেক্ষা। মুহূর্তে শেষ হয়ে যায় আলুর চিপ্স। পছন্দের কথা মাথায় রেখে তাতে জুড়েছে নানা রকম ফ্লেভারও। খুদে থেকে বড়, আলুর চিপ্স পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর।
কিন্তু, খেতে ভাল লাগলেও আলুর চিপ্স মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। একে ছাঁকা তেলে ভাজা, তার উপর বাড়তি নুন দেওয়া। এতে শুধু অতিরিক্ত ক্যালোরি, কার্বোহাইড্রেট ছাড়া কিছুই মেলে না। ফলে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজনের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাজারে এসেছে রকমারি সব্জির চিপ্স। আলুর বদলে, কচু, কাঁচকলার চিপ্স ছিলই। এখন বিকোচ্ছে ঢেঁড়স থেকে গাজর, রাঙা আলু-সহ বিভিন্ন ধরনের সব্জির চিপ্স। বিক্রেতাদের দাবি, সেগুলি ছাঁকা তেলে ভাজা নয়। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি।
কিন্তু প্যাকেটজাত সব্জির চিপ্স কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? না কি এ শুধুই বিক্রির জন্য প্রচারের কৌশল মাত্র!
গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ মোহিনী ডোংরে বলছেন,‘‘ডিহাইড্রেশন পদ্ধতিতে, অর্থাৎ অল্প তেলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে সব্জির চিপ্স বানানো হলে তাতে ভাজা চিপ্সের তুলনায় পুষ্টিগুণ বেশি মেলার সম্ভাবনা বেশি। এতে কিছুটা হলেও ফাইবার এবং ভিটামিন মিলবে। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে পদ্ধতির উপরে।’’ পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, চিপ্স যদি এয়ার ফ্রায়ারে বা কম তেলে বেক করে করা হয়, তা হলে তাতে পুষ্টিগুণ ভাজার চেয়ে বেশি থাকবে।
পাশাপাশি পুষ্টিবিদ এ কথাও মনে করাচ্ছেন, এই ধরনের চিপ্সকে আকর্ষণীয় এবং সুস্বাদু করার জন্য কৃত্রিম রঙের ব্যবহার করা হয় অনেক সময়। কোন কোনও চিপ্সে অতিমাত্রায় নুনও থাকে। এই দু’টিই কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে।
শম্পা জানাচ্ছেন, চিপ্স ডুবো তেলে ভাজলে কোনও গুণই তাতে বর্তমান থাকে না। তবে কলার চিপ্স হোক বা গাজর কিংবা কচু, যদি তা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়, তা হলে সেটি আলুর চিপ্সের তুলনায় পুষ্টিগুণে অবশ্যই এগিয়ে থাকবে। তবে, এর পরেও সেই খাবারের প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি কী ভাবে হচ্ছে, তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
সব্জির চিপ্স কি তাজা সব্জির পরিপূরক হতে পারে?
সব্জির চিপ্স খেলে শরীরে ভিটামিন, খনিজ যাবে, ভাবছেন অনেকেই। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, তা কখনই তাজা সব্জির পরিপূরক হতে পারে না। তাজা সব্জি বাড়িতে অল্প তেলে আঁচ কমিয়ে ভাজলেও তাতে বেশি মাত্রায় পু্ষ্টিগুণ মিলবে। পাশাপাশি, প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিক, রং পেটে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
পরিমাণ
আলুর থেকে সব্জির চিপ্স স্বাস্থ্যকর ভেবে খাওয়া শুরু করলেও তা অতিরিক্ত পরিমাণে কখনই খাওয়া উচিত নয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, খেতে ভাল লাগলেও, এই ধরনের চিপ্স খেতে হবে মেপে। কোনও কিছুই খুব বেশি খাওয়া ভাল নয়।