এইচ৩এন২ ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত পরিস্থিতিতে উদ্বেগে চিকিৎসকেরা। ছবি: সংগৃহীত।
এইচ৩এন২ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যু হল দুই রাজ্যে। মৃতদের মধ্যে এক জন হরিয়ানার বাসিন্দা, অন্য জন কর্নাটকের। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে নানা মহলে। চিকিৎসকদের মতে, এ বার আরও কঠিন রূপ ধারণ করছে ভাইরাস। তাই সতর্ক হওয়াও জরুরি। কিন্তু কী ভাবে হবেন?
এইচ৩এন২ ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত পরিস্থিতিতে উদ্বেগে চিকিৎসকেরা। গত ছ’মাসে ভাইরাসটি অপ্রত্যাশিত ভাবে তার রূপ পরিবর্তন করেছে বলে দাবি চিকিৎসকদের। এই ভাইরাসের প্রভাবে যে ফ্লু হয়, তাকে বলা হয় ‘হংকং ফ্লু’। ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাসের এই উপরূপটি অন্যান্য উপরূপের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক। এখন এইচ৩এন২ ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা আরও বেড়েছে। এই ভাইরাস স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি করছে, বিশেষত শ্বাসনালি ও ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এই উপরূপ, যা প্রাণঘাতী হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, কর্নাটকে যে ব্যক্তি এইচ৩এন২ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তাঁর বয়স ৮২ বছর। ওই ব্যক্তি ডায়াবিটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বয়স্করা, যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের বিশেষ করে সতর্ক থাকার জন্য ও জনবহুল এলাকা থেকে দূরে থাকার সতর্কবার্তা দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে যাঁদের শ্বাসকষ্ট আছে, হার্টের সমস্যা আছে কিংবা কিডনির রোগ রয়েছে, তাঁদের বাইরে বেরোনোর ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক থাকতে হবে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তো হতে হচ্ছেই, রোগীর সংখ্যা বাড়়ছে ‘ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’-এও। তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরেও বেশ চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। শিশুদেরও এই ভাইরাস থেকে বিশেষ ভাবে সাবধানে রাখার জন্য সতর্ক করেছে কেন্দ্র।
এইচ৩এন২ ভাইরাসের পাশাপাশি অ্যা়ডিনোভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন চিকিৎসকমহল। ছবি: শাটারস্টক।
এইচ৩এন২ ভাইরাসের পাশাপাশি অ্যা়ডিনোভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন চিকিৎসক মহল। গত দু’মাসে এই ভাইরাস শিশুদের শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি কছে। পশ্চিমবঙ্গে একাধিক শিশুর মৃত্যুও হচ্ছে এই কারণে। এ ক্ষেত্রেও শিশুদের ‘ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’-এ রাখার প্রয়োজন পড়ছে।
মরসুম বদলের সময়ে এই ভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কোভিডের প্রকোপ কমায় আমরা মাস্ক পরা ভুলতে বসেছি, এর ফলে সহজেই শরীরে বাসা বাঁধছে এইচ৩এন২, অ্যাডিনো ভাইরাসের মতো রোগের প্রকোপ। হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে জল বা সাবানের কোনও বিকল্প নেই। তবু যদি সব জায়গায় জল, সাবানের ব্যবস্থা না থাকে, তখন স্যানিটাইজ়ারের উপর ভরসা করতে হবে। সংক্রমণ ঠেকাতে চাইলে হাত না ধুয়ে শুধু খাবার খাওয়া নয়, চোখ-মুখ বা নাকও স্পর্শ করা যাবে না।