পরিবারের মানুষের কথা শুনেই শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ শুরু হয়। ছবি- সংগৃহীত
সন্তানের বেড়ে ওঠা নিয়ে অভিভাবকদের চিন্তার শেষ নেই। বিশেষত সন্তানের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশের ব্যাপারে অধিকাংশ মা-বাবাই সদা সচেতন। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু গবেষকদের মতে, শুধু খাবার নয়, মস্তিষ্কের বিকাশ অনেকটাই নির্ভর করে তাদের সঙ্গে সারা দিন ধরে চলা নানা রকম কথোপকথনের উপর। অন্তত হালের গবেষণা থেকে তেমনটাই জানা গিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কথা বলা বা শক্ত জিনিস খেতে পারার মতো কাজ শুরু করার আগে, পরিবারের মানুষের কথা শুনেই শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ শুরু হয়। তথ্যটি সম্প্রতি ‘দ্য জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
‘ইস্ট অ্যাঙ্গলিয়া’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক এবং গবেষক জন স্পেনসার জানান, শিশুদের অভিভাবক বা পরিবারের মানুষের সঙ্গে হওয়া কথোপকথন এবং আশপাশের নানা ধরনের কথার আওয়াজ এবং তার ফলে শিশুদের মধ্যে হওয়া প্রতিক্রিয়া ধরে রাখার জন্য সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৬৩ জন শিশুর কানে অডিয়ো রেকর্ডার তিন দিন ধরে রেখে দেওয়া হয়েছিল। ওই শিশুদের প্রত্যেকেরই বয়স ৬ থেকে ৩০ মাসের মধ্যে। এই ঘটনায় মস্তিষ্কের বিকাশ কেমন হচ্ছে, তা দেখার জন্য গবেষকরা ওই শিশুদের মাথার স্ক্যানও করে দেখেন।
প্রায় প্রতিটি স্ক্যানেই ‘মায়লিন’ নামক বিশেষ এক প্রকার স্নায়ুর অস্তিত্ব ঠাহর করেছেন তাঁরা। জন বলেন, “এক কোষ থেকে অন্য কোষে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও মজবুত করে তোলার জন্য সাধারণত স্নায়ুকোষের ভিতর এই ‘মায়লিন’ বেড়ে ওঠে। ভাষা এবং তার উপর ভিত্তি করে বাড়তে থাকা ‘মায়লিন’-এর পরিমাণ দেখার পরই গবেষকরা শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ সম্পর্কে নিশ্চিত হন।” সুতরাং, শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য ছোট থেকেই তাদের গল্প বা গান শোনানো, অনবরত তাদের সঙ্গে কথা বলার অভ্যাস করা প্রয়োজন।