দাঁত, মাড়ির যত্ন নেবেন কী ভাবে! ছবি: সংগৃহীত।
ছোটবেলায় শেখানো হত, রোজ রাতে শুতে যাওয়ার আগে ব্রাশ করা ভাল। এই অভ্যাসের যে উপকারিতা কত, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়।
বর্তমান সময় আমাদের খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস যেমন, তাতে মুখের স্বাস্থ্য ভাল রাখাটা খুবই জরুরি হয়ে গিয়েছে। না হলেই জিভে ঘা, দাঁতের ফাঁকে ঢুকে থাকা খাবার থেকে সংক্রমণ হওয়া, মাড়িতে অসুবিধা তৈরি — নানা কিছুই হতে পারে।
অনেক সময় দেখবেন, মুখের ভিতরটা কেমন যেন খটখটে শুকনো। লালা তৈরিই হচ্ছে না। জিভে জ্বালা, কিছু খেতে গেলে জ্বালা করছে। ঠোঁটের কোণ শুকিয়ে যাচ্ছে, সেখানেও চিড়বিড়ে জ্বালা। এমন সব উপসর্গ দেখা দিলে বিন্দুমাত্র দেরি করা ঠিক হবে না।
বয়স্করা শুধু নন, দাঁতের সমস্যায় এখন জেরবার ছোটরাও। কখনও দাঁতের গোড়ায় খাবার জমে ব্যথা হচ্ছে, আবার কখনও রাতবিরেতে টনটনিয়ে উঠছে মাড়ি। তা হলে মুখের যত্নে কী কী করা উচিত আর কী নয়, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
দাঁত, মাড়ির যত্নে কী কী করবেন? আর কী নয়?
১. ভাল করে মুখ পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি। দন্ত চিকিৎসকেরা বলেন, দিনে দু’বার দাঁত মাজা দরকার। যত বার খাবেন, তত বারই ভাল করে মুখ ধুতে হবে।
২. দাঁত ভাল আছে কি না, ক্যাভিটি হচ্ছে কি না, মাড়ির স্বাস্থ্য কেমন, আক্কেল দাঁত গজাচ্ছে কি না, সব কিছুই চেকআপ করিয়ে নেওয়া জরুরি। প্রতি ৬ মাসে অন্তত এক বার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করানো দরকার।
৩. কেমন ব্রাশ ব্যবহার করবেন সেটাও জানা জরুরি। সাধারণত নরম ব্রাশ ব্যবহার করাই উচিত। ভাল ব্র্যান্ডের ব্রাশ কিনুন, দরকার হলে দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. দাঁতের ধরন অনুযায়ী মাজন কেনা উচিত। মাড়িতে সমস্যা, ব্যথা থাকলে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল মাজন কিনতে হবে। দাঁতে ব্যথা, মুখে দুর্গন্ধ থাকলে সোডিয়াম লরেল সালফেট যুক্ত মাজন ব্যবহার করা ভাল। তবে আপনার মাড়ির জন্য কী ধরনের মাজন ভাল, সেটা চিকিৎসকের থেকে জেনে ব্যবহার করাই উচিত।
৫. আমরা যখন খাই, তখন খাবারের ছোট ছোট কণা দাঁতের ফাঁকে ঢুকে থাকে। কুলকুচি করলেও সেগুলি বেরোয় না। তাই দিনে একবার অন্তত ‘ডেন্টাল ফ্লস’ ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। সরু সুতোর সাহায্যে দুটি দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার বের করে নেওয়ার পদ্ধতিতেই বলা হয় ফ্লসিং। প্রতি বার খাওয়ার পর দাঁত মাজা সম্ভব না হলে, মুখ ধুয়ে নিয়ে করা যেতে পারে ফ্লস। তবে সকলে ফ্লসের পদ্ধতি জানেন না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছ থেকে শিখে নেওয়াই ভাল।
কী কী করবেন না?
১. তিন মাসের বেশি একটি ব্রাশ ব্যবহার না করাই ভাল।
২. চিকিৎসককে জিজ্ঞেস না করে বাজারচলতি কোনও মাউথওয়াশ ব্যবহার করবেন না।
৩. ব্যথা হলে নিজে থেকে দাঁতের ব্যথা কমানোর ওষুধ খাবেন না।
৪. জর্দা, পানমশলা ইত্যাদি তামাকজাতীয় জিনিস থেকে মুখে ঘা হয়। এ সব এড়িয়ে চলাই ভাল। অতিরিক্ত ধূমপানও দাঁতের পক্ষে ক্ষতিকারক।
৫. খুব বেশি চিনি আছে এমন খাবার, চিজ় বা প্যাকেটজাত বেকারির খাবার বেশি না খাওয়াই ভাল।
৬. চটচটে জেলি জাতীয় খাবার বেশি খেলেই ‘ক্যাভিটি’-র ঝুঁকি বাড়বে।
৭. খুব জোরে জোরে ব্রাশ করবেন না। নরম ব্রাশ দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ধীরে ধীরে ব্রাশ করুন। না হলে মাড়িতে খোঁচা লেগে পরে সংক্রমণ হতে পারে।