কী ভাবে করবেন পদাঙ্গুষ্ঠাসন? চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
মাঝেমধ্যেই ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন। খুব বেশি ক্ষণ হাঁটলে পায়ের পাতায় ব্যথা লাগছে। কোনও কোনও দিন পায়ের যন্ত্রণার চোটে ঘুমও উড়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধরনের উপসর্গ ‘ফ্ল্যাট ফুট’-এর কারণে হতে পারে।
ফ্ল্যাট ফুট কী?
মাটিতে পা রাখলে পায়ের পাতা পুরোপুরি মাটি স্পর্শ করে না। পায়ের মাঝের ঢেউখেলানো অংশটি মাটি থেকে খানিকটা উঠে থাকে। তবে ব্যতিক্রম আছে। এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের পায়ের পাতা একেবারে সমান্তরাল ভাবে মাটির সঙ্গে লেগে থাকে। এই সমস্যা কারও কারও জন্মগত। আবার ক্রমাগত পায়ের পাতায় চাপ পড়ার ফলেও এমনটা হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় ‘ফ্ল্যাট ফুট’।
তবে এই ধরনের সমস্যা আসান হয়ে যেতে পারে আসনে। যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, নিয়ম করে রোজ পদাঙ্গুষ্ঠাসন অভ্যাস করলে এই ধরনের সমস্যা বশে রাখা যায়।
সংস্কৃত ‘পদ’ কথাটির অর্থ হল পা। ‘অঙ্গুষ্ঠ’ শব্দের অর্থ হল বুড়ো আঙুল। অর্থাৎ, এই আসনে পা, পা এবং হাতের বুড়ো আঙুলের কাজ থাকবে। পদাঙ্গুষ্ঠাসন অভ্যাস করা খুব কঠিন নয়। তবে সঠিক ভাবে এই ভঙ্গি অভ্যাস করতে না পারলে লাভ হবে না।
কী ভাবে করবেন?
· প্রথমে ম্যাটের উপর টান টান হয়ে দাঁড়ান। শ্বাস-প্রশ্বাস নিন স্বাভাবিক ভাবে। পায়ের পাতাও যেন টান টান থাকে। হাত থাকবে দেহের দু’পাশে।
· এ বার পা, হ্যামস্ট্রিং টান টান রেখে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর ভাঁজ করুন। পুরো শরীরটা সামনের দিকে প্রসারিত করার চেষ্টা করুন। বুক থাকবে হাঁটুর কাছাকাছি। মাথা মাটির দিকে ঝোলানো অবস্থায় থাকবে।
· কনুই ভাঁজ করে দু’হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে দুই পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করুন। মাথা যতটা সম্ভব দুই হাঁটুর মাঝামাঝি জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
· এই অবস্থান ধরে রাখুন অন্তত ২০ সেকেন্ড। খেয়াল রাখবেন, শ্বাস-প্রশ্বাস যেন একেবারে স্বাভাবিক থাকে। তার পর আবার ধীরে ধীরে একেবারে প্রথম অবস্থানে ফিরে আসুন।
কেন করবেন?
গোটা শরীরের রক্ত চলাচাল ভাল হয়। এ ছাড়া আর্থাইট্রিসের সমস্যা থাকলে এই আসন অভ্যাস করতে পারেন। গোটা দেহের পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দারুণ ভাবে কাজ করে এই আসনটি। অবসাদ নিয়ন্ত্রণেও পদাঙ্গুষ্ঠাসনের ভূমিকা রয়েছে।
সতর্কতা:
দেহে ভারসাম্যের অভাব থাকলে প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে থেকে এই আসন করতে হবে। না হলে পড়ে গিয়ে বিপদ ঘটতে পারে। মাথা ঘোরা, রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও এই আসন করা নিষিদ্ধ। কোমর, নিতম্বে কোনও রকম চোট-আঘাত লেগে থাকলে পদাঙ্গুষ্ঠাসন করা যাবে না।