রাত জেগে পার্টি করলেও শরীর খারাপ হবে না, কোন নিয়মগুলি মানবেন? ছবি: শাটারস্টক।
উৎসব মানেই অনিয়ম। রাতজাগা, বাইরে খাওয়াদাওয়া, সঙ্গে অফুরন্ত কড়া পানীয়। বড়দিনে অনেকেরই রাতভর পার্টির পরিকল্পনা আছে। সে বাইরেও যেতে পারেন অথবা বাড়িতেই পার্টির আয়োজন হতে পারে। দেদার খাওয়াদাওয়া হবেই। সঙ্গে মদ্যপান। ক’দিন বাদেই বর্ষশেষ ও নতুন বছরের উদ্যাপনও আছে। খানাপিনা হবে তখনও। কিন্তু সকলের পেট কি এত অত্যাচার সহ্য করতে পারবে? তা ছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা তো রয়েছেই। আজকাল তো বেশির ভাগেরই রক্তচাপের সমস্যা, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিস আছে। কাজেই সব সামলে শরীরও ঠিক রাখা চাই। আবার উৎসবের আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে তা-ও দেখতে হবে। তাই অনিয়মের মাঝেও কী কী নিয়ম মানলে সুস্থ থাকবেন জেনে নিন।
এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল জানিয়েছেন, অনিয়ম যতই হোক, শরীর যদি ঠিক রাখতে হয় তা হলে পর্যাপ্ত জল খেতেই হবে। বড়দিন, বর্ষবরণের উৎসবে মদ্যপান করবেনই অনেকে। সে ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম মানতে হবে। বেশি পরিমাণে মদ খেলে শরীরে জলের ঘাটতি হতে পারে। তাই বেশি করে জল ও তরল খাবার খেতেই হবে। তা হলে শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দ্রুত বেরিয়ে যাবে। অ্যালকোহলের সঙ্গে খুব বেশি নুন দেওয়া খাবার বা প্রক্রিয়াজাত খাবার খাবেন না। না হলেই হজমের সমস্যা হবে। খালি পেটে মদ্যপান নৈব নৈব চ। সহজে হজম হবে এমন খাবার খেয়ে নিতে হবে আগে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি পার্টি শুরুর আগে জল খেয়ে নিতে পারেন। তা হলে নারকেলের জল, বা সামান্য ওআরএস মিশিয়েও জল খেতে পারেন। এতে শরীর চট করে ডিহাইড্রেটেড হবে না।
ডায়াবিটিস রোগীদের এই সময়ে বড় সমস্যা। ইচ্ছে করলেও এক টুকরোর বেশি কেক খেতে পারেন না। শুকনো ফল, বাদাম, মাখনে ভরপুর কেক বেশি খেলে রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে। উৎসবের দিনে কেক খেতেই পারেন, তবে নিয়ম মেনে। সবই খাওয়া যাবে যদি পরিমাণ বুঝে খাওয়া যায়।
রাতভর পার্টির পরদিন সকালে খিদে পেলে কোনও ভাজাভুজি নয়, হালকা টোস্ট খান। অথবা যে কোনও দানাশস্য যেমন ওট্স, রাগি বা ডালিয়াও খাওয়া যেতে পারে। মদ্যপানের পরে শরীরে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ কমে যেতে পারে। সে কারণে প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। সে কারণে হালকা খাওয়াই ভাল। ওট্মিল খেলে নেশার প্রকোপ তো কমবেই, মদ্যপানের জন্য যে শারীরিক সমস্যাগুলি হয় সেগুলিও কমে যাবে। শরীরে পুষ্টি উপাদানগুলির ভারসাম্য বজায় থাকবে। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হবে। ক্লান্তিভাব কমে যাবে।
রাতে নেশার মাত্রা বেশি হলে যদি সকালে শরীর খারাপ লাগে তা হলে ভারী খাবার খাবেন না। কলার স্মুদিতে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। অথবা সকালে ঘুম থেকে উঠে ঈষদুষ্ণ জলের সঙ্গে লেবু আর মধু মিশিয়ে খান। তাতেও সমস্যা রয়ে গেলে প্রতি আধ ঘণ্টা অন্তর দুই থেকে ছ’ছামচ করে মধু খেতে থাকুন। চা বা কফি বেশি খাবেন না। গ্রিট টি বা ভেষজ চা খেতে পারেন।