Weight Loss Tips

পুজো আসতে বাকি কাঁটায় কাঁটায় এক মাস! ভাত, রুটি খেয়েও ৪-৫ কেজি ওজন কমাবেন কী ভাবে?

পুষ্টিবিদ জানিয়েছেন, জাদুকাঠি নয়, ভাত এবং রুটি খেয়েও পুজোর আগেই রোগা হওয়া সম্ভব। আশ্চর্য লাগলেও, সত‍্যি। তবে এই এক মাসে নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম। কী সেগুলি?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পুজো আসতে হাতে গুণে আর এক মাস বাকি। দুর্গাপুজোর আগে সাজগোজের একটা প্রস্তুতি চলে। সেই সঙ্গে শুরু হয় রোগা হওয়ার তোড়জোড়। অনেকেই কম সময়ে ওজন কমানোর পন্থা খোঁজেন। সারা বছর একটানা অনিয়মে শরীরে মেদ জমতে থাকে। বাহারি পোশাকের আড়ালে সেই মেদ না লুকিয়ে বরং ঝরিয়ে ফেলাই শ্রেয় বলে মনে করেন অনেকে। আর তাই এই পুজোর আগে রোগা হওয়ার প্রয়াস। হাতে ৩০ দিনের বেশি সময় নেই। কী ভাবে এই সময়পর্বে ওজন কমানো যায় তা নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে অনেকেরই। আনন্দবাজার অনলাইন পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক অনন‍্যা ভৌমিকের কাছে জানতে চেয়েছিল কোন জাদুকাঠির ছোঁয়ায় এক মাসে অন্তত ৪-৫ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। পুষ্টিবিদ জানিয়েছেন, জাদুকাঠি নয়, ভাত এবং রুটি খেয়েও পুজোর আগেই রোগা হওয়া সম্ভব। আশ্চর্য লাগলেও, সত‍্যি। তবে এই এক মাসে নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম। কী সেগুলি?

Advertisement

পুষ্টিবিদের মতে, বিচ‍্যুতি না ঘটিয়ে যদি নিয়ম মেনে চলা যায়, তা হলে তিন সপ্তাহেই রোগা হওয়া সম্ভব। তবে তার জন‍্য এই কয়েক দিন একটি নির্দিষ্ট রুটিনে বাঁধতে হবে নিজেকে। এ বার সেগুলিই জেনে নেওয়ার পালা।

এই এক মাসের ডায়েটে কী কী খাওয়া যাবে তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কোনগুলি খাওয়া যাবে না। তারই একটি তালিকা দিয়েছেন পুষ্টিবিদ।

Advertisement

কোন খাবারগুলির মায়া ত‍্যাগ করতে হবে?

দুগ্ধজাত খাবার এমনকি পনিরও, সব ধরনের ভাজাভুজি, মিষ্টি এবং চিনি আছে এমন খাবার— এগুলি খাওয়া বন্ধ করতেই হবে। এ ছাড়া এড়িয়ে চলতে হবে ময়দার তৈরি খাবার এবং যে কোনও ধরনের পানীয়। কোল্ড কফি, আইস টি-ও এর মধ‍্যে পড়ে। এই ধরনের পানীয়ে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে।

কোনগুলি খাওয়া যাবে?

চিয়া বীজ বেশ উপকারী বলে জানাচ্ছিন পুষ্টিবিদ। পেটও ভর্তি রাখে। বিশেষ ক‍্যালোরিও নেই। শরবত, স‍্যালাডে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে খাওয়ার আগে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরিমিত পরিমাণ প্রোটিন খেলেই চলবে। মুরগির মাংস, নানা ধরনের মাছ, ডিম খাওয়া যেতে পারে। প্রোটিন আছে এই খাবারগুলিতে। মরসুমি ফল এবং সব্জি খাওয়া অত‍্যন্ত জরুরি। ডাল খাওয়া যেতে পারে। তবে পরিমাণে অল্প। ডাল আর চিকেন দুটোতেই প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। একই দিনে দুটো না খাওয়াই শ্রেয়।

আবার সন্ধ‍্যাবেলায় খিদে পেলে বাদাম, অঙ্কুরিত ছোলা, স‍্যুপ, চিকেন স্টু, লস‍্যি খাওয়া যেতে পারে। আলাদ করে চিনি মেশানো আছে এমন খাবার না খেলেই হল।

ছিপছিপে চেহারার সঙ্গে রুটি, ভাতের বিরোধ নেই

রোগা হওয়া মানেই ভাত,রুটি খাওয়া বন্ধ করা। সিংহভাগের তেমনই ধারণা। অনন‍্যা বলেন, ভাত, রুটি না খেয়ে সাময়িক ভাবে ওজন ঝরে ঠিকই। তবে পরবর্তী কালে এই ভাত, রুটি না খাওয়ার প্রবণতা ডায়াবিটিস ডেকে আনতে পারে। তাই ভাত এবং রুটি খেয়েও রোগা হওয়া সম্ভব, তেমনই আশ্বাস দিয়েছেন পুষ্টিবিদ।

প্রোটিন রোগা হওয়ার একমাত্র জাদুকাঠি নয়

অনেকেরই ধারণা, সব কিছু ছেড়ে শুধু প্রোটিন খেলেই রোগা হওয়া সম্ভব। পুষ্টিবিদ এই ধারণা নস‍্যাৎ করে দিয়েছেন। এই পদ্ধতি শরীরের জন‍্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন তিনি। এতে কিডনির উপর চাপ পড়ে, ইউরিক অ‍্যাসিড বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এই পদ্ধতি মেনে চলা উচিত। বাড়ির খাবার খেয়েই রোগা হওয়া যায়। পরিমিত পরিমাণে খেলেই হবে। বেশি পেট ভর্তি করে খাবার খাওয়া ঠিক হবে না।

খাওয়ার সময় মন অন‍্যত্র হারিয়ে যেতে দেওয়া চলবে না

মন দিয়ে খাবার খাওয়া ওজন কমানোর অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। মন দিয়ে এবং সময় নিয়ে চিবিয়ে খেতে হবে। খাবার খাওয়ার সময় অন‍্য কোনও কাজ করলে চলবে। একসঙ্গে অনেকটা খাবার খেয়ে নেওয়াও ঠিক নয়। পরিমাণ মতো খাবার সময় নিয়ে খেতে হবে। এই নিয়ম মানলে সত‍্যিই ওজন কমানো সহজ হয় এবং হজমশক্তিও বাড়ে বলে জানালেন পুষ্টিবিদ।

রোগা হতে গেলে খাবার খেতে হবে মন দিয়ে। ছবি: সংগৃহীত।

রোগা হতে গেলে ঘুমোতেও হবে

ডায়েট করছেন অথচ রাতভর জেগে থাকছেন, তা হলে কিন্তু রোগা হওয়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। ওজন ঝরানোর সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুমের স্বপ্ন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম এক্ষেত্রে জরুরি।

ডায়েট করে মিলবে সুফল, যদি খান জল

জল ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অত‍্যন্ত অপরিহার্য উপাদান। শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হলে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই কিছুতেই জল খাওয়া বন্ধ করলে চলবে না। সারা দিনে ২.৫ থেকে ৩ লিটার পর্যন্ত জল খাওয়া বাধ‍্যতামূলক।

জিম নয়, হাত-পা নাড়ালেই হবে

এক মাসে রোগা হওয়ার জন‍্য জিমে না গেলেও চলবে। তবে রোজের দৌড়ঝাঁপ বজায় রাখতে হবে। অফিসে একটানা বসে না থেকে একটু হাঁটাচলা করতে পারলে ভাল। লিফট ব‍্যবহার না করে যদি সিঁড়ি ধরে ওঠা যায়, তার চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না। কিংবা স্বল্প দূরত্বের পথ যদি হেঁটে চলে যাওয়া যায়, সেটাও উপকারী। সাইকেল চালানো কিংবা সকালের দিকে যদি একটু জগিং করা যায়, তা হলেও উপকার পাওয়া যাবে। শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকতে হলে একটু সতর্ক থাকা জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement