কত দিন অন্তর জলের বোতল ধোয়া জরুরি? ছবি: শাটারস্টক
শরীর সুস্থ রাখতে জলের ভূমিকা অপরিহার্য। জলের কোনও বিকল্প নেই। সামগ্রিক সুস্থতার জন্য জল খাওয়া ভীষণ জরুরি। তারকা থেকে সাধারণ মানুষ— খালি পেটে জল খেয়ে দিন শুরু করেন অনেকেই। জল যে শুধু শরীরের যত্ন নেয় তা তো নয়, জলের গুণে ভাল থাকে ত্বক ও চুলও। চিকিৎসকেরা সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার কথা বলে থাকেন বার বারই। আর্দ্র রাখা ছাড়াও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে জল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিডনি ভাল রাখতে বেশি করে জল খাওয়া ছাড়া পথ নেই। জল খাওয়ার অভ্যাস কিডনি থেকে বর্জ্য বার করে দিয়ে পাথর জমার ঝুঁকি কমায়।
তবে পরিমাণ মতো জল খেয়েও বমি, পেটের সমস্যায় ভুগলে কিন্তু সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পর তাঁদের প্রথম প্রশ্ন থাকে, জলের বোতলটি নিয়ম মতো পরিষ্কার করেন তো? তবে বেশির ভাগ মানুষই কিন্তু বলতে পারবেন না যে, রোজ তাঁরা সময় বার করে জলের বোতলটি সাফ করেন।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জল ফুরিয়ে যাওয়ার পরে আবার সেই বোতলেই জল ভরে নেন অনেকে। বোতল পরিষ্কার করতে গিয়ে কোনও রকমে জল দিয়ে ধুয়েই কাজ সেরে ফেলেন অনেকে। এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা স্বচ্ছ বোতলটি যখন ঘোলাটে হয়ে এলে তবেই ধোয়ার জন্য উদ্যোগী হন। এই না ধোয়া জলের বোতলেই লুকিয়ে থাকে শয়ে শয়ে জীবাণু, মোল্ড ও ছত্রাক। আপাতদৃষ্টিতে যা পরিষ্কার মনে হচ্ছে, তা হয়ে উঠতে পারে অসুখের আঁতুড়ঘর। ত্বকের সমস্যা থেকে নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, ফ্লু, জন্ডিস— জল থেকে ছড়ানো রোগের তালিকাটি লম্বা। জলের মাধ্যমেই ব্যাক্টিরিয়া, প্রোটোজ়োয়া, ভাইরাস ইত্যাদি মুখ দিয়ে মানবশরীরে প্রবেশ করে। এর ফলেই টাইফয়েড, জন্ডিস, কলেরা , ডিসেন্ট্রির মতো জলবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ে।
অনেকের ধারণা যে, রাস্তার জল খেলেই এই সব রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে জলের পাত্রেই যে লুকিয়ে বিপদ, সেই খবর অনেকেই রাখেন না। বিশেষ করে শিশু কিংবা বয়স্ক— যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম— তাঁদের ক্ষেত্রে এই সব রোগ প্রাণঘাতীও হতে পারে। এক দিনের বেশি বোতলে জল রেখে দিলে সেই জলের উপর বায়োফিল্মের আস্তরণ পড়ে। সেই স্তরে আদতে জীবাণুদের বংশবিস্তার করতে সুবিধা হয়। বোতলে ফলের রস, গ্লুকোজ় গোলা জল থাকলে জীবাণুরা আরও বেশি মাত্রায় বংশবিস্তার করে।
কত দিন অন্তর জলের বোতল ধোয়া জরুরি?
দিনে অন্তত এক বার করে জলের বোতল ধোয়া জরুরি। কেবল জল দিয়ে নয়, সাবানজল দিয়ে এবং ব্রাশ ব্যবহার করে জলের বোতল ধুতে হবে। সপ্তাহে অন্তত এক বার ভিনিগার ও বেকিং সোডা জলে গুলে বোতলে কিছু ক্ষণ ভরে রেখে তার পর সাবানজল দিয়ে ধুয়ে নিন। এ ছাড়া বোতল থেকে মুখ দিয়ে জল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেই অভ্যাসে বদল আনুন। অন্যের বোতল থেকে জল খাওয়ার অভ্যাসও ছাড়তে হবে।