ঘুমোতে যাওয়ার আগে ফোন ঘাঁটা ভাল নয়। ছবি: সংগৃহীত
এখন ছোট থেকে বড়, সকলেই মোবাইলে বড় বেশি আসক্ত। ফাঁকা সময় পেলেই সময় কাটানোর সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন মুঠোফোনকেই। শুধু তা-ই নয়, বেশির ভাগেরই অভ্যাস রাতে বিছানায় শুয়েও ফোন ঘাঁটা। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ফেসবুকে ঘোরাঘুরি কিংবা ইনস্টাগ্রামে অনবরত স্ক্রোলিং— অনেকের কাছেই ঘুমের ওষুধের মতো। বেশ খানিকটা সময় মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি না করলে ঘুম আসতে চায় না অনেকের। আবার অনেকের আসক্তি মোবাইল গেমে। একটা রাউন্ড না জিতে তাঁরা যেন কিছুতেই চোখের পাতা এক করতে পারেন না।
সম্প্রতি 'জার্নাল অফ স্লিপ রিসার্চ'-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, ঘুমোতে যাওয়ার আগে ফোন ঘাঁটা মোটেই ভাল ব্যাপার নয়। এতে একযোগে চাপ পড়ে শরীরে আর মনে। এই অভ্যাসের প্রভাব পড়তে পারে আপনার স্মৃতিশক্তির উপরেও। রাত জেগে মোবাইল ঘাঁটলে ঘুম ঠিকঠাক হয় না, আর ঘুম না হলেই শরীরে বাসা বাঁধে হাজারটা রোগ। মোবাইলের নীল আলো আপনার চোখে প্রবেশ করে এবং আপনার মস্তিষ্কে আঘাত করে, তার পর মেলাটোনিনের ক্ষরণ কমিয়ে দেয়, যা সরাসারি প্রভাব ফেলে ঘুমের উপর।
রাত জেগে মোবাইল ঘাঁটলে ঘুম ঠিকঠাক হয় না। ছবি: সংগৃহীত
ঘুমের অভাব হলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
১) শরীরচর্চা না করা, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা— ওজন বেড়ে যাওয়ার পিছনে এই কারণগুলিকেই ধরা হয়। গবেষণা বলছে, ঘুমের ঘাটতি থাকলেও বাড়তে পারে ওজন।
২) চিকিৎসকদের মতে উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। ঘুম কম হলে বাড়তে পারে হৃদ্রোগের ঝুঁকি। ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন’-এর এক গবেষণা তা-ই বলছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ হার্টের রোগীরই ঘুম কম হওয়ার সমস্যা রয়েছে।
৩) ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যোগসূত্র নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা হয়ে আসছে। চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে বলেছেন পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে বিঘ্নিত হতে পারে মানসিক স্বাস্থ্য। অনেক দিন ধরে ঘুমের ঘাটতির কারণে দেখা দিতে পারে মানসিক অবসাদও।
৪) প্রত্যেকেরই একটি স্বতন্ত্র ক্ষমতা থাকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার। যে কোনও রোগের প্রাথমিক ঝড়ঝাপটা শরীর নিজেই সামাল দেয়। সেই প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়, যখন শরীরে ঘুমের ঘাটতি ঘটে। দিনের পর দিন কম ঘুমোনোর প্রভাব পড়ে শরীরের অন্দরে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা হারাতে থাকে শরীর।