ঋতুস্রাব চলাকালীন হাত-পায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, ক্লান্তির মতো শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন অনেকে। —ফাইল চিত্র
ঋতুস্রাবের দিনগুলি এমনিতেই কঠিন হয় নারীদের জন্য। ঋতুস্রাব চলাকালীন হাত-পায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, ক্লান্তির মতো শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন অনেকে। আর শীতকালে আরও বেড়ে যায় এই সংক্রান্ত সমস্যা। ঠান্ডার দিনগুলিতে আরও বেশি অসুবিধায় পড়েন নারীরা। কিন্তু কেন হয় এমন? চিকিৎসকদের অনেকের মতে, মূলত চারটি কারণে শীতকালে বিড়ম্বনা বাড়ে নারীদের।
১। হরমোনের ভারসাম্যের সমস্যা
ঋতুস্রাব চলার সময়ে ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরনের মতো বিভিন্ন হরমোনের ক্ষরণে বদল আসে। তাতে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকেও নানা বদল আসে নারীদের। আর শীতকালে বেলা ছোট হয়ে আসায় আরও বাড়ে সমস্যা। শীতে কম থাকে রোদও। সব মিলিয়ে এন্ডোক্রিন গ্রন্থি ও থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কিছুটা কমে যেতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা হ্রাস পেলে দেহে বিপাকের গতিও কমে যায়। বেড়ে যেতে পারে ঋতুচক্রের দৈর্ঘ্য।
২। ঋতুস্রাবের আগে
শীতকালে সূর্যালোক কম থাকায় ভিটামিন ডি কম তৈরি হয়, যা ঋতুস্রাবের পূর্ব লক্ষণ বা ‘পিএমএস’-এর কারণ হতে পারে। অনেকেই ঠান্ডায় বাড়ির বাইরে বেরোতে চান না। বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ কমে গেলে মানসিক অবসাদ দেখা দিতে পারে। এমনিতেই ঋতুস্রাবের আগে হরমোনের তারতম্যে অনেকেরই মন-মেজাজ খারাপ থাকতে পারে। সব মিলিয়ে শীতের বিষাদ সেই সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন। খেতে পারেন ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারও। তাই পালং শাক, বাদাম, মুসুর ডাল মটরশুঁটি খেতে পারেন। অতি অবশ্যই পরিমাণ মতো জল খেতে হবে।
শীতকালে রক্তনালীর সঙ্কোচন ঘটায় রক্ত চলাচলে কমে যায়। যার ফলে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায় ব্যথা। —ফাইল চিত্র
৩। রক্তনালীর সঙ্কোচন
ঋতুস্রাবের সময়ে দেহ থেকে অনেকটা রক্ত বেরিয়ে যায়। অনুভূত হয় যন্ত্রণাও। শীতকালে রক্তনালীর সঙ্কোচন ঘটায় রক্ত চলাচলে কমে যায়। যার ফলে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায় ব্যথা। এই সময়ে আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। গোটা শস্য, চর্বিযুক্ত মাছ, ডার্ক চকোলেট, দই ইত্যাদি খেতে পারেন। আদা ও পুদিনা পাতা দিয়ে তৈরি গরম পানীয়ও পেটব্যথা কমাতে কার্যকর হতে পারে।
৪। ডিম্বস্ফুটনের হার কমে যাওয়া
শীতকালে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোনের ক্ষরণ কমে যায় গরম কালের তুলনায়। ফলে দীর্ঘায়িত হয় ঋতুচক্র। পাশাপাশি, ডিম্বস্ফুটনের হার ৯৭ শতাংশ থেকে কমে হয় ৭১ শতাংশ। ফলে ঋতুস্রাব ঘটিত ক্লান্তি বৃদ্ধি পায় কয়েক গুণ।