সাত দিন কিছু নিয়ম মেনে চললে ফের কিছুটা ফিটফাট হতে পারবেন।
হাতে সময় মোটে এক সপ্তাহ। এত কম সময়ে অনেকটা ওজন ঝরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। এবং স্বাস্থ্যকরও নয়। তবে বেশির ভাগ মানুষের জীবনযাপন এখন যতটা অস্বাস্থ্যকর, তাতে সাত দিনে এক ধরনের সুস্থ জীবনযাপনে ফেরা সম্ভব। বসে বসে কাজ করে যাঁদের শরীরে যাবতীয় কল-কব্জাও বসে গিয়েছে, তাঁরা সাত দিন কিছু নিয়ম মেনে চললে ফের কিছুটা ফিটফাট হতে পারবেন।
তবে খুব কঠিন কোনও ডায়েট বা ভয়ঙ্কর কোনও ব্যায়ামের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে না। সহজ কিছু খাওয়ার নিয়ম এবং ততধিক সহজ কিছু ব্যায়ামের একটি তালিকা রইল আগামী সাত দিনের জন্য। যাতে রোজের কাজে বেরোনো ১০টা-৬টার অফিস করা মানুষ এই নির্দেশগুলি সহজেই মানতে পারেন। জিমে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই। বাড়ির ছাদে বা কাছাকাছি কোনও মাঠ বা পার্কে সহজেই এই ব্যায়ামগুলি করে ফেলা যাবে। তা হলে বেশি দ্বিধা না করে জেনে নিন সাত দিনে ফিট হওয়ার রুটিন।
যখন নতুন জীবনযাপন শুরু করতেই হবে, তা হলে সপ্তাহের ছুটির দিনটিই বেছে নেওয়া সেরা।
রবিবার
রবিবার খুব বেশি খাটতে কেউ-ই পছন্দ করেন না। তবে কোথা থেকে যখন নতুন জীবনযাপন শুরু করতেই হবে, তা হলে সপ্তাহের ছুটির দিনটিই বেছে নেওয়া সেরা।
কী খাবেন: রোজকার মতোই খাবার খান। শুধু প্রত্যেক বার খাওয়ার আগে এক কাপ মতো ফল খেয়ে আসল খাবার একটু পরিমাণে কম নিন।
শরীরচর্চা: ১০ মিনিট হাঁটুন, ১০ মিনিট দৌড়ান, ১০ মিনিট ফের হাঁটুন।
দুপুর ভাত না খেয়ে তার বদলে অনেকটা স্যালাড খান।
সোমবার
সোমবার সকলেরই অফিস যেতে কম-বেশি অনীহা হয়। ক্লান্তি ভাবও যেন বেশি চেপে ধরে। কিন্তু আলসেমি না করে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান।
কী খাবেন: দুপুর ভাত না খেয়ে তার বদলে অনেকটা স্যালাড খান। স্যালাডে যেন নানা রকমের সব্জি থাকে। ড্রেসিংয়ে মেয়োনিজ বা চিজ দেবেন না। দই দিয়ে বানাতে পারেন। লেবুর রস বা এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল দিয়েও তৈরি করতে পারেন।
শরীরচর্চা: ৪৫টি জাম্পিং জ্যাক, ২ মিনিট বিরতি, ১৫টি ক্রাঞ্চেস, ২৫ সেকেন্ড প্লাঙ্ক। এ ভাবে ২-৩ বার করুন।
মঙ্গলবার
এ দিন হয়তো আপনার শরীর আর একটু বদলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকবে।
কী খাবেন: গ্র্যানোলা, কলা এবং কিছু বেরি সামান্য মধু দিয়ে খান। পেট অনেক ক্ষণ ভরা থাকবে, খেতেও ভাল লাগবে।
শরীরচর্চা: ৫ মিনিট হাঁটুন, ১০ মিনিট দৌড়ান, ১০ মিনিট ফের হাঁটুন।
বুধবার
সপ্তাহের মাঝামাঝি। আপনার স্ফূর্তি কমে যেতে পারে। তাই রইল শরীরচর্চা করার মজাদার উপায়।
কী খাবেন: শরীরচর্চার পর জোর খিদে পাবে। কোনও র্যাপ বা রোল বানিয়ে খেতে পারেন। শুধু পিটা ব্রেড বা টর্টিলা রুটি ব্যবহার করুন ময়দার বদলে।
শরীরচর্চা: যে কোনও এক ধরনে ঘাম ঝরানো খেলা এক ঘণ্টা খেলুন। সন্তানের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি করেও কাটাতে পারেন। ক্রিকেট খেলতে পারেন। কিংবা অন্য সঙ্গী-সাথী জুটিয়ে বাস্কেটবল, ভলিবল বা ব্যাডমিন্টনও খেলতে পারেন।
সপ্তাহ প্রায় শেষের দিকে। নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলুন।
বৃহস্পতিবার
সপ্তাহ প্রায় শেষের দিকে। নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলুন।
কী খাবেন: খুচরো খিদে পেলে উল্টোপাল্টা না খেয়ে নিজের পছন্দের কোনও ফল দিয়ে একটি স্মুদি বানিয়ে খান। বাড়তি চিনি অবশ্যই দেবেন না।
শরীরচর্চা: ১৫টি বার্পিজ, ১ মিনিট বিরতি, ৩০ ক্রাঞ্চেস, ১৫টি পুশআপ, ৪০টি জাম্পিং জ্যাক। ২ থেকে ৩ বার এই ব্যায়ামগুলি করতে হবে।
শুক্রবার
সকাল সকালই শরীরচর্চা সেরে ফেলুন। শুক্রবারের সন্ধেবেলায় কারও ব্যায়াম করতে ইচ্ছে করে না।
কী খাবেন: সারা দিন অল্প অল্প করে ৫ বার খেতে পারেন। তবে সব খাবার আগে থেকে হাতের কাছে জোগাড় করে রাখুন। যাতে খিদের মুখে অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে ফেলেন।
শরীরচর্চা: ৩ মিনিট হাঁটুন, ১০ মিনিট দৌড়ান, ৩ মিনিট হাঁটুন, ৫ মিনিট দৌড়ান।
মাঝে খিদে পেলেও গাজর, শসা বা অন্য ভুট্টার মতো খাবার খান।
শনিবার
অবশেষে সপ্তাহের শেষ দিন। পর দিনই ফের ছুটি। তাই খুশিমনে আপনার এই রুটিন শেষ করুন।
কী খাবেন: জলখাবার, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারে টাটকা সব্জি-মাছ বা অন্য লিন প্রোটিন খান। এবং তার মাঝে খিদে পেলেও গাজর, শসা বা অন্য ভুট্টার মতো খাবার খান।
শরীরচর্চা: ১০টি পুশআপ, ১৫ ক্রাঞ্চেস, ২০ বার হাওয়ায় লাফিয়ে স্কোয়াট। ৫ থেকে ৬ বার এই নিয়মে ব্যায়ামগুলি চালিয়ে যান।