প্রতীকী ছবি।
মুসুর ডাল, লেবু, পাতলা মাছের ঝোল আর শেষপাতে দই— গরমে অধিকাংশ বাঙালির পাতে এগুলিই থাকছে। দুপুরের মেনুতে বদল এলেও শেষপাতে টক দই থাকছেই। তাপপ্রবাহে স্বস্তি পেতে নিয়ম করে টক দই খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদেরা। গরম বলে নয়, অনেকে সারা বছরই টক দই খান। প্রতি দিনই খেতে হয় বলে বাড়িতেই টক দই পাতেন অনেকে। তাতে অনেকটা সাশ্রয়ও হয়। আবার শরীরেও যত্ন নেওয়া হয়। সময় বাঁচাতে অনেকেই আবার ভরসা রাখেন বাজারের প্যাকেটজাত টক দইয়ের উপর। বাড়িতে পাতা দই না কি বাজার থেকে কিনে আনা প্যাকেট— কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর?
বাজার থেকে যে টক দই কিনে আনা হয়, তা মূলত পাস্তুরাইজেশন পদ্ধতিতে তৈরি হয়। এর ফলে ব্যাক্টেরিয়াগুলি বিনষ্ট হয়। একই সঙ্গে দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদানও নষ্ট হয়ে যায়। শরীরের জন্য প্রোবায়োটিক খুবই উপকারী। ফলে বাজার থেকে কেনা দই শরীরে প্রোবায়োটিকের ঘাটতি তৈরি করে। তবে ঘরে পাতা দইয়ে কিন্তু প্রোবায়োটিক উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। এই উপাদান হজমের গোলমাল ঠেকায়। পেট ভাল রাখে।
তার মানে এই নয় যে প্যাকেটের দই খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। প্যাকেটজাত দইয়েও কিন্তু উপকারী উপাদানের অভাব নেই। প্রোটিন এবং ক্যালশিয়াম রয়েছে ভরপুর পরিমাণে। প্রোবায়োটিকের বিকল্প না হলেও এই উপাদানগুলি শরীরের জন্য কম উপকারী নয়।
প্যাকেটের দই খাবেন না কি বাড়িতে দই পাতবেন— তা নির্ভর করছে শরীরের প্রোবায়োটিক উপাদানের চাহিদার উপর। যদি মনে হয় প্রোবায়োটিক আপনার শরীরের জন্য বেশি জরুরি, তা হলে বাড়িতে পাতা টক দই খেতে পারেন। আর যদি মনে হয়, প্রোবায়োটিকের চেয়ে ক্যালশিয়াম, প্রোটিনের মতো উপাদানগুলি বেশি জরুরি, তা হলে প্যাকেটের টক দই খেতে পারেন। তবে পুষ্টিবিদেরা সব সময় বাড়িতে পাতা টক দই খাওয়ারই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ বাড়িতে বানানো দই কৃত্রিম ভাবে বানানো হয় না। ফলে দইয়ে যা যা স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে, তা সবটাই ভরপুর পরিমাণে বজায় থাকে। দ্রুত হজম হয়। হজমজনিত কোনও সমস্যাও তৈরি হয় না। তবে একান্তই প্যাকেটের দই খাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় না থাকলে কেনার আগে প্যাকেটের গায়ে লেখা উপকরণের তালিকা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখটি দেখে নিন। সেই মতো মেয়াদ ফুরোনোর আগেই টক দই খেয়ে নিতে হবে।