প্রাতরাশে কতটা প্রোটিন খাওয়া জরুরি, কারা কতটা খাবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
প্রাতরাশে প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখারই পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। এতে বার বার খিদে পাওয়ার প্রবণতা কমে এবং মেদও ঝরে। তবে দ্রুত ওজন কমানোর আশায় অনেকেই পুষ্টিবিদদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে ‘প্রোটিন ডায়েট’ করতে শুরু করেন। কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রোটিন খেয়ে ফেলেন। প্রাতরাশে কেবল দু’টি করে ডিম সেদ্ধ খান অনেকেই। ডিম সুষম খাবার, কিন্তু এতে ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট নেই। যদি শরীর সুস্থ রেখেই দ্রুত ওজন কমাতে হয়, তা হলে রোজের খাদ্যতালিকায় নির্দিষ্ট মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট রাখাই জরুরি।
প্রাতরাশে ঠিক কতটা প্রোটিন দরকার, সে বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই অনেকেরই। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিন প্রাতরাশে ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের মতো প্রোটিন থাকলে ভাল হয়। দু’টি ডিম খেলে ১২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যাবে, যা চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। কাজেই এর সঙ্গে আরও কিছু খেতেই হবে।
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মতে, এক জন প্রাপ্তবয়স্কের শরীরের প্রতি কেজি ওজন পিছু ০.৮ গ্রাম প্রোটিনের দরকার হয়। যাঁরা ভারী শরীরচর্চা করেন, তাঁরা প্রতি কেজি ওজন পিছু ১.৩ গ্রাম থেকে ১.৬ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারেন। বয়স, উচ্চতা, ওজন, কী ধরনের কাজ করেন, কতটা পরিশ্রম করেন, এই সব কিছুর উপরেই নির্ভর করবে দিনে ঠিক কতটা প্রোটিন জরুরি।
প্রাতরাশে প্রোটিন অবশ্যই খেতে হবে, তবে মেপে। যাঁরা দু’টি করে ডিমসেদ্ধ খাচ্ছেন, তাঁরা সঙ্গে দুটি রাগি বা বাজরার রুটি ও এক বাটি ফল রাখুন। এতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারের চাহিদা মিটে যাবে। তবে ডিম খাওয়ারও নিয়ম আছে। যদি ডিমের পোচ খেতে হয়, তা হলে রান্না করবেন জলে, তেলে নয়। রোজকার ডায়েটে বাদ দিন ভাজা ডিমের পদগুলি। কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড খুব বেশি হলে, প্রাতরাশে ক’টা ডিম খেতে পারবেন তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।
আর যদি প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবারই খেতে চান, তা হলে মুগ ডালের ইডলি বা দোসা, পনিরের পুর ভরা দোসা খাওয়া যেতে পারে। ভারী শরীরচর্চা করলে প্রাতরাশে দু’টি ডিম খাওয়া যেতে পারেই। বাদামও রাখতে পারেন পরিমিত। কার্ডিয়ো বা ওয়েট ট্রেনিং করেন যাঁরা, অথবা ভারী ব্যায়াম করেন তাঁরা দিনে দু’-তিনটি ডিম খেতেই পারেন। তবে শরীর বুঝে খেতে হবে। সে ক্ষেত্রে শরীরচর্চার পরে ডিম খাওয়াই ভাল। ব্যায়ামের পরে পেশির ক্লান্তি দূর করার জন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতেই হয়। ওই সময়ে অন্তত একটি সিদ্ধ ডিম বা ডিমের পোচ খাওয়া ভাল।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা।
সকলের শরীর এক রকম নয়। তাই প্রাতরাশে কতটা প্রোটিন খাবেন এবং ডিম খেলে ঠিক ক’টা আপনার
শরীরে সইবে, তা চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।