সর্ষের তেলের তেঁতো স্বাদ কাটানোর জন্য ধোঁয়া ওঠা পর্যন্ত গরম করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
স্বাদ, ঝাঁঝ এবং গাঢ় রং দেখেই বোঝা যায়, কোনটা সর্ষের তেল। বাঙালি রান্না তো বটেই, অনেক উত্তর ভারতীয় পদেও ব্যবহার করা হয় সর্ষের তেল। অনেক পুষ্টিবিদই এখন বাজারের ভেজিটেবিল তেলের বদলে সর্ষের তেলে রান্না করাতেই জোর দেন বেশি। কারণ সর্ষের তেলে রান্না করার অনেকগুলি উপকারিতা রয়েছে। যেমন—
১। গায়ে-হাত-পায়ে ব্যথা কমে
২। সর্দি-কাশির প্রবণতা কমে
৩। হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখে
৪। শরীরে সব রকম প্রদাহ কমায়
৫। ত্বক ও চুলের যত্ন নেয়
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
কিন্তু কী ভাবে রান্না করছেন, তার উপর নির্ভর করে তেলের উপকারিতা কতটা পাবেন। আমরা বেশির ভাগ পদ রান্না করার সময়ে কড়াইয়ে তেল দিয়ে তা গরম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি। রং হাল্কা হয়ে ধোঁয়া উঠলে আমরা আঁচ কমিয়ে তেল খানিক ঠান্ডা হতে দিই। তার পর তাতে রান্না শুরু হয়। কিন্তু এতে সর্ষের তেলের অনেক গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়, তা জানা আছে কি?
সর্ষের তেলে যে তাপমাত্রায় পৌঁছে সব পুষ্টিগুণ হারিয়ে ফেলে, তা অনেকটাই বেশি। কিন্তু অনেকে তেল পুড়িয়ে ফেলেন সহজে। এমনিতে সর্ষের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এরুসিক অ্যাসিড, যা হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রয়েছে মোনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডও। তাই হৃদ্রোগে আক্রান্তদের জন্য সর্ষের তেলে রান্না করাই শ্রেয়। কিন্তু তেল পুড়িয়ে ফেললে তাতে থাকা যাবতীয় জরুরি ফ্যাটি অ্যাসিড নষ্ট হয়ে যায়, ফ্যাট অক্সিডাইজ্ড হয়ে শরীরের ক্ষতি করে।
তবে একদল পুষ্টিবিদ এ-ও মনে করেন, একমাত্র সর্ষের তেলই পুড়়ে গেলে তার সব পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না। অন্য তেলের ক্ষেত্রে যা সহজেই হয়ে যায়। তবে সর্ষের তেলের তেঁতো স্বাদ দূর করতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ভাল করে গরম করে ধোঁয়া ওঠার পরই রান্না শুরু হয়। তাতে শরীরের কতটা ক্ষতি হচ্ছে, তা তর্কসাপেক্ষ হলেও স্বাদ যে খাসা হয়, তাতে কোনও দ্বিমত নেই।