বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভপাতের ঝুঁকি কম না বেশি, তা নির্ভর করছে খাওয়াদাওয়ার উপর। ছবি: সংগৃহীত।
মাতৃত্ব জীবনের একটি নতুন অধ্যায়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বদল আসে শরীর এবং মনে। ফলে এই সময়ে যতটা সম্ভব সাবধানে থাকা জরুরি। গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক গঠনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন কোনও কিছুই করা উচিত নয় অনেক সময়ে। সতর্ক এবং সচেতন থেকেও অনেক ক্ষেত্রেই অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে।
এর নেপথ্যে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার জটিলতাকেই দায়ী করা হয়। তবে সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় গর্ভপাতের ঝুঁকি কমানোর খাদ্যাভ্যাসের কথা উঠে এসেছে। সমীক্ষা জানাচ্ছে, শাকসব্জি, সামুদ্রিক খাবার, দুগ্ধজাত খাবার, অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা মূলত এই গবেষণাটি করেন। অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের শিকার, এমন কয়েক জন মহিলার অন্তঃসত্ত্বাকালীন অবস্থায় খাদ্যাভ্যাসের বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভপাতের ঝুঁকি কম না বেশি, তা নির্ভর করছে খাওয়াদাওয়ার উপর।
ডিম এবং বিভিন্ন ধরনের শস্য অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের ঝুঁকি কমায়। ছবি: সংগৃহীত।
ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি’ নামক মেডিক্যাল পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণা জানাচ্ছে, ডিম এবং বিভিন্ন ধরনের শস্য অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের ঝুঁকি কমায়। এই তালিকায় রয়েছে সামুদ্রিক মাছ, সবুজ এবং সতেজ শাকসব্জির মতো খাবার। এই খাবারগুলিতে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে শিশুর বেড়ে ওঠা হয় সুষ্ঠু এবং স্বাভাবিক।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ফল খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি কমে ৬১ শতাংশ। শাকসব্জি কমায় ৪১ শতাংশ, দুগ্ধজাত খাবারে গর্ভপাতের আশঙ্কা কমে ৩৭ শতাংশ। ডিম, শস্য এবং সামুদ্রিক খাবার অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের ঝুঁকি কমায় প্রায় ১৯ শতাংশ।
চিকিৎসরা জানাচ্ছেন, সামগ্রিক ভাবে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার গর্ভপাতের আশঙ্কা কমায়। পাশাপাশি, কোন ধরনের খাবারে গর্ভপাতের ঝুঁকি রয়েছে, তা-ও জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। গবেষণা জানাচ্ছে, বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবারেই লুকিয়ে থাকে বিপদ। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাই এই ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকাই ভাল। দেশে অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের সংখ্যা ইদানীং বেড়েছে। প্রতি ৬ জন অন্তঃসত্ত্বার মধ্যে এক জন এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। তাই খাওয়াদাওয়ায় বদল আনা অত্যন্ত জরুরি।