যত ব্যস্ততাই থাকুক, নিয়মিত যোগাসন করেন অভিনেত্রী মালাইকা অরোরা। ছবি: সংগৃহীত।
শরীরকে সুস্থ রাখতে রোজকার ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়ম মেনে কিছু ক্ষণ শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। তবে নানা রকম শরীরচর্চার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী হল যোগাসন। ওজন কমানোর পাশাপাশি একাধিক রোগব্যধি দূরে রাখতে যোগাসনের কোনও বিকল্প নেই। তবে দেহের নির্দিষ্ট কিছু অংশ থেকে মেদ ঝরাতে অনেকেই শুধুমাত্র ওই জায়গাগুলির উপর বেশি নজর দেন। প্রশিক্ষকেরা বলছেন, তাতে লাভ খুব একটা হয় না। বরং ফিট থাকতে, রক্ত সঞ্চালন ভাল রাখতে এমন কিছু যোগাসন করা উচিত, যা গোটা শরীরের সঙ্গে যুক্ত।
১) প্ল্যাঙ্ক
প্রথমে শরীর উপুড় করে, হাতের চেটোর উপর ভর দিয়ে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দুটো একটু ছড়িয়ে রাখুন। পায়ের আঙুল এবং পাতার উপর ভর দিয়ে, গোটা শরীর মাটি থেকে সমান্তরাল ভাবে তুলে ধরুন। এই অবস্থায় থাকুন ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত। চাইলে সাইড প্ল্যাঙ্কও করতে পারেন। তার জন্যে ডান দিকে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ুন। এ বার মেঝেতে ডান হাত রাখুন। ডান হাতের উপর গোটা শরীরের ভর দিন। বাঁ হাতটা উপরে ঘরের ছাদের দিকে সোজা করে তুলে ধরুন। পা দুটো জোড়া করে রাখুন। এ বার ডান হাতের উপর ভর দিয়ে শরীরটাকে ওঠান। ৩০-৬০ সেকেন্ড রেখে নামিয়ে উল্টো পাশ ফিরেও একই জিনিস করুন।
ঘাড়, কোমরের ব্যথা কমাতে কার্যকরী এই ব্যায়াম। ছবি: সংগৃহীত।
২) ভুজঙ্গাসন
মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার হাতের তালু মেঝের উপর ভর দিয়ে পাঁজরের দুই পাশে রাখুন। এর পর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিকে তুলুন। এর পর মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান। প্রথম দিকে এই আসন তিন বার করুন। পরবর্তী কালে ৫-৬ বারও করতে পারেন।
৩) ধনুরাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। তার পর হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা যতখানি সম্ভব পিঠের উপর নিয়ে আসুন। এ বার হাত দুটো পিছনে নিয়ে গিয়ে গোড়ালির উপর শক্ত করে চেপে ধরুন। চেষ্টা করুন, পা দুটো মাথার কাছাকাছি নিয়ে আসতে। এই ভঙ্গিতে মেঝে থেকে বুক, হাঁটু ও উরু উঠে আসবে। তলপেট ও পেট মেঝেতে রেখে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। তার পর পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে যান। এই আসন বার তিনেক করতে পারেন।
৪) পদহস্তাসন
সোজা হয়ে দাঁড়ান। তার পর আস্তে আস্তে পা দুটো সামান্য ফাঁক করুন। এ বার ভাল করে শ্বাস নিতে নিতে হাত দুটো উপরের দিকে তুলুন। আস্তে আস্তে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন। হাত দিয়ে গোড়ালি স্পর্শ করুন। খেয়াল রাখবেন, হাঁটু যেন না ভাঙে। ২০-৩০ সেকেন্ড এই অবস্থায় থাকার পর আগের অবস্থায় ফিরে যান।
৫) শবাসন
কেবল হাত-পা ছড়িয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লেন মানেই শবাসন হয়ে গেল, এ রকম ভাবার কোনও কারণ নেই। শবাসন করতে হলে প্রথমে পিঠের উপর ভর দিয়ে শুতে হবে। তার পর হাত দুটো দু’পাশে রেখে পা দুটো সোজা করে রাখতে হবে। হাতের তালু থাকবে উপরের দিকে। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে হবে। এক সময় ভারী হতে হতে শরীর ছেড়ে দেবে। এই অবস্থায় চোয়াল শক্ত করে ধরে রাখার কোনও দরকার নেই। সমস্ত ব্যায়াম করার একেবারে শেষে অভ্যাস করতে হবে শবাসন। শরীরের চাহিদা বুঝে, মিনিট পাঁচেক পর্যন্ত অভ্যাস করা যেতে পারে এই ব্যয়াম।