সন্তান কি কিছুই খেতে চায় না? কোন পথে সমাধান? ছবি: প্রতীকী
স্কুলে যাওয়ার সময় কিংবা রাতে খাবার খাওয়ার সময়, খাওয়ার টেবিলে তুলকালাম কাণ্ড বহু বাড়ির রোজের ঘটনা। কারণ আর কিছুই না, খাবারের প্রতি সন্তানের অনীহা। কেউ বকাঝকা করেন খুদেকে, কেউ আবার গল্পের ছলে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেন সন্তানকে। কিন্তু এই ঘটনা রোজ রোজ ঘটলে শিশুর পুষ্টিতে ঘাটতি থেকে যেতে পারে। তাই বিষয়টির স্থায়ী সমাধান দরকার।
১। দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল জলখাবার। তাই সন্তানকে কোনও মতেই ছাড় দেবেন না। যতই বায়না করুক, রোজ সকালে নিয়ম করে একটা নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়ান সন্তানকে। সন্তান যদি দেখে, কোনও মতেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, তখন বাধ্য হয়েই সকালের খাবার খেতে হবে নিয়ম করে। অনেক সময়ে এক খাবার খেয়ে খেয়েও বাচ্চাদের অনীহা জন্মে যায়। একটু ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বিভিন্ন রকম খাবার দিন।
২. এক বারে অনেকটা না খাইয়ে বার বার খাবার খাওয়ান। বার বার অল্প অল্প করে খেতে দিলে তাদের খিদেও তৈরি হবে, আবার পুষ্টির ঘাটতিও হবে না। ২-৩ ঘণ্টা অন্তর কখনও ফল, কখনও স্যুপ, কখনও স্যান্ডউইচ খাওয়াতে পারেন।
পেটের সমস্যা থেকে মানসিক অবসাদ, সন্তান খাবার না খাওয়ার নেপথ্যে থাকতে পারে গভীরতর কোনও কারণ। ছবি: সংগৃহীত
৩. বাইরে বেরোলেই চিপ্স, চকোলেট কিংবা ভাজাভুজি খাওয়ার বায়না করে শিশুরা। ঝামেলা এড়াতে কিংবা স্নেহের বশে অনেক অভিভাবকই সেই সব বায়না মেনে নেন। সন্তানের হাতে তুলে দেন কেক-পেস্ট্রি-চিপ্স। এতে খুদেদের খিদে আরও মরে যায়। এ সব খাবার থেকে পুষ্টিও মেলে না। এই ধরনের বায়নায় কান দেবেন না। বরং বৈচিত্র আনুন রোজের খাবারে। দই কিংবা দুধে ফলের কুচি মিশিয়ে দিন। ডিমসেদ্ধ দিলে একটু সস দিয়ে আঁকিবুকি কেটে পরিবেশন করুন।
৪. শিশুরা যেন পর্যাপ্ত পরিশ্রম করে। খেলাধুলো না করলে শরীর তৈরি হয় না। তাই বিকেল হলেই খেলতে পাঠান সন্তানকে। রোজ ঘাম ঝরাতে পারলে বিপাক হার ভাল থাকে। খিদেও বাড়ে। ঘরের মধ্যে ছুটোছুটি করলে বকাবকি করবেন না। দৌড়ঝাঁপ করা মোবাইল নিয়ে বসে থাকার থেকে ঢের ভাল।
৫. এত কিছুর পরেও যদি খিদে না বাড়ে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। অনেক সময়ে শারীরিক সমস্যা থেকেও খাবার খাওয়ায় অনীহা দেখা দিতে পারে। পেটের সমস্যা থেকে মানসিক অবসাদ, সন্তান খাবার না খাওয়ার নেপথ্যে থাকতে পারে গভীরতর কোনও কারণ। বিশেষত যদি হঠাৎই খাবার খেতে অনীহা দেখা দেয়, তবে কারণ খুঁজে বার করা জরুরি।