ঘাম ছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে শরীর থেকে এমন অপ্রীতিকর গন্ধ বার হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
শরীরের দুর্গন্ধ সকলের জন্যেই বেশ লজ্জাজনক ব্যাপার। বিশেষ করে এই গরমে অনেক বেশি ঘাম হয়। নিজেকে দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ডিওড্র্যান্ট, সুগন্ধি। এক একজনের ক্ষেত্রে ঘামের পরিমাণ আলাদা হলেও, ঘাম আটকানোর কোনও উপায় নেই। শরীরের অতিরিক্ত জল এবং কিছু মিনারেল ঘাম হিসাবে বার করে দেয়। প্রত্যেকের শরীরে নিজস্ব কিছু গন্ধ আছে। কিন্তু তা যদি অস্বস্তির কারণ হয়ে তা হলে সমস্যা। ঘাম থেকে সরাসরি দুর্গন্ধ বার হয় না। ত্বকে ঘাম জমে তৈরি হওয়া ব্যাক্টেরিয়া মূলত দূর্গন্ধের কারণ। তবে ঘাম ছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে শরীর থেকে এমন অপ্রীতিকর গন্ধ বার হতে পারে।
১) খাদ্যাভ্যাসের কারণে: শরীরের দুর্গন্ধ কমাতে রোজের খাওয়াদাওয়ার প্রতিও বাড়তি নজর দিতে হবে। কিছু খাবার যেমন রসুন ও পেঁয়াজ ঘামের গন্ধকে ভয়ঙ্কর করে তুলতে পারে। গরমে বেশি করে পেঁয়াজ, রসুন দেওয়া খাবার খেলে শরীর থেকে বাজে গন্ধ বার হওয়ার একটা আশঙ্কা তৈরি হয়। এই ধরনের মশলাদার খাবার খাওয়ার ফলে শরীর থেকে সালফারযুক্ত যৌগগুলি নির্মূল হতে সময় লাগে। সেগুলি ঘামের সঙ্গে জোট বেঁধে বাজে গন্ধ তৈরি করে।
শরীরের দুর্গন্ধ কমাতে রোজের খাওয়াদাওয়ার প্রতিও বাড়তি নজর দিতে হবে। ছবি: সংগৃহীত
২) মুখের স্বাস্থ্য ভাল না থাকলে:দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করা ছাড়াও শরীরের দুর্গন্ধ কমানোর জন্যেও মুখের স্বাস্থ্য ভাল রাখা জরুরি। খাবারের টুকরো এবং ব্যাক্টেরিয়া দাঁতের ফাঁকে জমে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। নিশ্বাস থেকেও বার হয় দুর্গন্ধ। নিশ্বাসে বাজে গন্ধের কারণে শরীর থেকেও বার হতে পারে দুর্গন্ধ। তাই শরীর থেকে দুর্গন্ধ বার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে দিনে দু’বার দাঁত মাজা জরুরি। মুখের ভিতর ভাল করে পরিষ্কার করা জরুরি।
৩) অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়ও অনেক সময় শরীরের গন্ধে পরিবর্তন আসতে পারে। এর অন্যতম কারণ হল শরীরে হরমোনের পরিবর্তন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে ঘাম বেশি হয়। এই সমস্যার মোকাবিলা করতে শরীর আর্দ্র রাখা প্রয়োজন। বেশি করে জল খাওয়া জরুরি। ঢিলেঢালা পোশাক পরা প্রয়োজন।
৪) যৌনাঙ্গে সংক্রমণের কারণে: সঠিক পরিচ্ছন্নতার অভাবে মূলত যৌনাঙ্গে সংক্রমণ দেখা দেয়। নিয়মিত পরিচর্যার অভাবে যৌনাঙ্গের চামড়ায় মৃত কোষ জমতে থাকে। দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকার ফলে ত্বকে ক্ষত তৈরি হয়। সেখান থেকেই বার হয় দুর্গন্ধ। শরীরেও ছড়িয়ে পড়তে এই দুর্গন্ধ। এরকম হলে ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার না করাই ভাল। এতে ক্ষত বেড়ে যাতে পারে।
৫) বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে: শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে ফাইবার যুক্ত খাবার খুবই উপকারী। হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে, কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যাও কোলেস্টেরল মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে ফাইবার। তবে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরের ঘর্ম গ্রন্থিগুলি বন্ধ করে দেয়। ফলে ঘাম বার হতে পারে না। জমে থাকা ঘাম থেকে তৈরি হয় ব্যাক্টেরিয়া। তার থেকেই বার হয় দুর্গন্ধ। ফাইবার যুক্ত খাবার স্বাস্থ্যকর। তবে পরিমিত পরিমাণে খেলেই ভাল।