শীতকালে কী কী মেনে চলতে হবে মধুমেহ রোগীদের ছবি: সংগৃহীত
অনেকের জন্য ঠান্ডা আবহাওয়া মানেই আরামদায়ক উষ্ণ খাবার, গরম লেপ এবং বাড়িতে কাটানো কিছু আসলেমির মুহূর্ত। কিন্তু ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য এই আলসেমি সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। শীতকালে শরীরচর্চার অভাব ও দৈনন্দিন জীবনের নিয়ম মেনে না চলা মধুমেহ রোগীদের জন্য মোটেও ভাল নয়। সঙ্গে যুক্ত হয় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাবারের আকাঙ্ক্ষা। ফলে ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে শীতকাল খুবই বিপজ্জনক হতে পারে।
এই মরসুমে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি হল স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণ যুক্ত খাবার বজায় রাখা।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। পুষ্টি নিয়ন্ত্রণ
শরীরে শক্তি সরবরাহকারী ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলির মধ্যে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট।
এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট রক্তের শর্করার উপর সর্বাধিক প্রভাব ফেলে। যদিও স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য শর্করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তার পরিমাণ হতে হবে পরিমিত। বিশেষত ভারতীয় নিরামিষ খাবারে সাধারণত কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে।
২। শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকুন
যে কোনও ধরনের শারীরিক ব্যায়ামই শরীরের স্বাস্থ্যকর ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার একটি দুর্দান্ত উপায়। এমনকি, ১৫ মিনিটের পরিমিত ব্যায়ামও শর্করার স্তরকে প্রভাবিত করতে পারে। সুতরাং যতই অলস লাগুক, অল্প বিস্তর শরীরচর্চা করতেই হবে।
৩। চাপ নিয়ন্ত্রণ
শুধুমাত্র মানসিক চাপ ডায়াবিটিস সৃষ্টি করে না, তবে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব সাইকো নিউরো এন্ডোক্রিনোলজি দ্বারা প্রকাশিত গবেষণাগুলি উচ্চ চাপ এবং টাইপ-২ ডায়াবিটিসের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ধিত চাপ কর্টিসোলের উৎপাদন বেড়ে যেতে পারে, যা শরীরকে আরও বেশি পরিমাণ শর্করা তৈরি করার দিকে ঠেলে দেয়। তা রক্তে শর্করার মাত্রাকেও প্রভাবিত করতে পারে। হালকা যোগাভ্যাস, ধ্যান বা বই পড়ার মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে উপকারী।
৪। রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন নিয়মিত
আবহাওয়ার যে কোনও পরিবর্তন শরীরের ইনসুলিন তৈরির ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। শীতকালে বেশি খিদে পায় কারণ ঠান্ডায় শরীর আমাদের উষ্ণ রাখতে আরও শক্তি ব্যবহার করে। কিন্তু হঠাৎ কিছু খেতে ইচ্ছা করলে প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিবর্তে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াই শ্রেয়। কিন্তু এ ভাবে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু খাবার খাওয়া হলে একাধিক বার রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করা যেতে পারে। তাতে কিছুটা দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা যায়।
৫। বাদাম খান
যাঁরা ডায়াবিটিসের ভয়ে মুখে তোলেন না কিছুই, তাঁরা কিন্তু বাদাম জাতীয় খাবার খেতেই পারেন। আমন্ড, ব্রাজিল নাট, আখরোটের মতো বাদামে খাবারের হুজুগও কমবে। বাড়বে না রক্তের শর্করার পরিমাণও।