শরীরে গ্লুকোজ়োর অভাব হলে পূরণ করে শক্তির জোগান দিতে পারে ডাবের শাঁস। ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা থেকে ডানকুনি হয়ে দিল্লি কিংবা মুম্বই জাতীয় সড়ক ধরে একটু এগোলেই রাস্তা দু’পাশে সারি সারি ডাববিক্রেতারা দাঁড়িয়ে থাকেন। গাড়ি করে যাওয়ার সময়ে সেখানে দাঁড়িয়ে ডাব খাওয়া যেন দস্তুর। কিন্তু প্রত্যেক বার গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই মাঝরাস্তায় দীপান্বিতা এবং তাঁর মায়ের ঝামেলা শুরু হয় এই ডাব খাওয়া নিয়ে। দীপান্বিতা কিছুতেই কচি ডাব খাবেন না। কারণ, তার মধ্যে শাঁস তো থাকেই না, উল্টে তার স্বাদ এমন কষা যে, মেজাজটাই বিগড়ে যায়।
এ দিকে, দীপান্বিতার মায়ের কাছে স্বাস্থ্যই শেষ কথা। যা উপকারে লাগে না, এমন কোনও জিনিস তিনি নিজে খান না, মেয়েকেও খেতে দেন না। তাঁর মতে, কচি ডাবের জলের যা উপকার, তা আর কিছুতে নেই। ডাবের শাঁস তো মুখের স্বাদে খাওয়া। পুষ্টিগুণ বলতে কিছুই নেই। অথচ আইসক্রিম খাওয়ার কথা উঠলেই তিনি সব ছেড়ে আগে কিন্তু ‘টেন্ডার কোকোনাট’ই বেছে নেন। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, নারকেলে পরিণত হওয়ার আগে ডাবের ভিতর যে পাতলা শাঁস তৈরি হয় তার মধ্যেও বিভিন্ন ভিটামিন, প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় বেশ কিছু খনিজ থাকে। যা আমাদের বিপাকক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া, ডাবের শাঁস শরীরের নানা উপকারে লাগে।
১) হার্টের জন্য ভাল
ডাবের শাঁসে যে তৈলাক্ত পদার্থ থাকে, তা হৃদ্যন্ত্রের জন্য ভাল। রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং ‘ভাল’ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
২) হজমে সহায়ক
ডাবের শাঁসে ফাইবারের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। তাই পরিমিত পরিমাণ ডাবের শাঁস যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তা কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। অন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভাল রাখে।
৩) প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করে
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ শাঁস উন্নত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এই খাবারের মধ্যে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ়। যা প্রদাহনাশে বিশেষ ভাবে সহায়ক।
ডাবের শাঁসে যে তৈলাক্ত পদার্থ থাকে, তা হৃদ্যন্ত্রের জন্য ভাল। ছবি: সংগৃহীত।
৪) মস্তিষ্কের জন্য ভাল
শরীরে গ্লুকোজ়োর অভাব হলে তা-ও পূরণ করে শক্তির জোগান দিতে পারে ডাবের শাঁস। শাঁসে উপস্থিত ‘মিডিয়াম-চেন ট্রাইগ্লিসারাইড’ যৌগটি গ্লুকোজ়ের বিকল্প হিসাবে কাজ করে। যা মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী।
৫) ওজন ঝরাতেও সাহায্য করে
মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে ডাবের শাঁস। কারণ, এই খাবারে থাকা প্রোটিন অনেক ক্ষণ পর্যন্ত পেটভার রাখে। ফলে বারে বারে মুখ চালানোর প্রবণতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদিও এ বিষয়ে মতান্তর রয়েছে।