শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না ৫ খাবার। ছবি: শাটারস্টক।
জীবনযাত্রা সম্পর্কে সচেতন না হলে অল্প বয়সেই থাবা বসাতে পারে হৃদ্রোগ। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিস থাকলে এই বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া জরুরি। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমরা এতখানিই অসচেতন যে, একটা বয়সের পর বেশির ভাগের মধ্যেই হৃদ্রোগজনিত কোনও না কোনও সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের জীবনযাত্রায় অনিয়ম, অত্যধিক ব্যস্ততা, মানসিক চাপ— এগুলিও কিন্তু হৃদ্রোগের কারণ হতে পারে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকা জরুরি। কারণ, রক্ত কতটা সচল ভাবে শিরায় শিরায় বইছে, তার উপর নির্ভর করে অনেক কিছু। শরীরে কয়েক হাজার রক্তনালি রয়েছে, যেগুলি হৃৎপিণ্ড-সহ শরীরের সব অঙ্গে রক্ত সরবরাহ করে। রক্ত সরবরাহের পরিমাণ ঠিক থাকলে শরীর ভাল থাকে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। অনেক সময়ে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় বলেই নানা বিপদের সৃষ্টি হয়। তার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা, হাঁটচলা করা ছাড়াও ভরসা রাখা যেতে পারে কয়েকটি খাবারের উপর।
বেদানা: শরীরে রক্ত চলাচল সচল রাখার অন্যতম রাস্তা হল বেদানা খাওয়া। এই ফলে রয়েছে পলিফেনলের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা শিরায় রক্তের সরবরাহ ঠিক রাখে। শুধু শিরা নয়, প্রতি কোষে অক্সিজেনের জোগান পর্যাপ্ত রাখতেও এই উপাদান কার্যকরী। রস করে অথবা খোসা ছাড়িয়ে বেদানা খেতে পারেন। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলেও বেদানা ওষুধের মতো কাজ করে।
বিট: এই সব্জিতে রয়েছে নাইট্রেটস, যা শরীরে পৌঁছে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়। নাইট্রিক অক্সাইড শরীরে রক্ত চলাচল ঠিক রাখে। পেশিতে রক্তের যোগান পর্যাপ্ত রাখে। তা ছাড়া এই উপাদান রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে। হৃদ্রোগের ঝুঁকিও কমে এতে।
সাইট্রাস জাতীয় ফল: মুসাম্বি, কমলা, আমলকি, আঙুরে ভিটামিন সি এবং ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি। এই ফলগুলি খেলে রক্তের চাপ কমে। ফলে রক্তবাহিকায় যদি কোনও ভাবে প্রদাহ হয়, তা-ও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
বাদাম এবং বিভিন্ন রকম বীজ: প্রতি দিন পাঁচটি করে কাঠবাদাম, একটি আখরোট এবং বিভিন্ন ধরনের বীজ খেলেও রক্তের চাপ বশে থাকে। এই সমস্ত খাবারে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন ই এবং ফলিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি। এই সমস্ত উপাদানই রক্ত সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রসুন এবং পেঁয়াজ: আমিষ রান্নার অন্যতম উপকরণ জুটি। রসুনে রয়েছে ‘অ্যালিসিন’ নামক উপাদান, যা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। রসুনের মতো পেঁয়াজেও রয়েছে স্বাস্থ্যকর উপাদান। পেঁয়াজে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গে সমান ভাবে রক্ত সরবরাহ করে। রসুন রক্ত পাতলা করে, ফলে জমাট বেঁধে যাওয়ার কোনও ভয় থাকে না। অনেকেই নিয়মিত রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে সমাধান পেতে রসুনের উপর ভরসা রাখতে পারেন।
উপরের প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। শরীরে কোনও রকম সমস্যা থাকলে কিংবা কোনও ক্রনিক রোগ থাকলে ডায়েটে কোনও রকম বদল আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।