গরমের দিনে ডায়াবেটিক রোগীরা কোন পানীয় খেলে উপকার পাবেন? ছবি: শাটারস্টক
বর্ষার মরসুমেও সূর্যের চোখ রাঙানিতে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। মাঝেমধ্যে বৃষ্টির কারণে সামান্য স্বস্তি মিললেও দুপুরে রাস্তায় বেরোনো মানেই ঘেমেনেয়ে একাকার অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ার পরমর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। জলের ঘাটতি মেটানোর পাশাপশি শরীরকে ঠান্ডা রাখাও ভীষণ দরকার। এ ক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন বিভিন্ন প্রকার পানীয়তে।
তবে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে মিষ্টিযুক্ত পানীয় খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। বাজারজাত সস্তা-দামি পানীয়তে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও ভরপুর মাত্রায় চিনি থাকে। যা শরীরের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। তাপদাহ থেকে বাঁচতে ডায়াবেটিকরা কোন কোন পানীয় খেতে পারেন?
ডাবের জল ও তুলসী বীজ
এই পানীয় ইলেকট্রোলাইটের খুব ভাল উৎস। গরমের দিনে নিয়মিত ডাবের জল খেলে শরীরে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি কমে। পেট ঠান্ডা থাকে। ডাবের জল শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে। এ ছাড়াও তুলসী বীজে ফাইবার, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ভরপুর মাত্রায় থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই শরীর চাঙ্গা রাখতে গ্রীষ্মের দিনে ডায়াবেটিকরা তুলসীর বীজ ভেজানো ডাবের জল খেতে পারেন।
বেলের শরবত
বেল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও ভাল মাত্রায় থাকে। অনেকেই চিনি দই দিয়ে মেখে বেলের শরবত খান। তবে ডায়াবিটিস থাকলে বেলের ক্বাথ বার করে জলের সঙ্গে মিশিয়ে ভাজা জিরে ও চাটমশলা দিয়ে খেতে পারেন।
ডায়াবেটিক রোগীরা চিনি ছাড়া ঘোল খেতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
দইয়ের ঘোল
বাড়িতে ঘোল তৈরির সবচেয়ে সহজ উপায় হল দইয়ের সঙ্গে জল মিশিয়ে তাতে নুন ও ভাজামশলা, ধনেপাতা কুচি দিয়ে পরিবেশন করা। এই পানীয়টি প্রোবায়োটিকের ভাল উৎস যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে, হজমে সাহায্য করে শরীরে জলের ঘাটতি কম করে। ডায়াবেটিক রোগীরা চিনি ছাড়া এই পানীয় উপভোগ করতে পারেন।
বার্লির শরবত
বার্লিতে অদ্রবণীয় ফাইবার ভাল মাত্রায় থাকে। গরমের দিনে ডায়াবিটিসের সমস্যা থাকলে বার্লি শরবত খেতে পারেন। এই পানীয় রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আধ লিটার ৩ চামচ বার্লি ও এক টুকরো আদা মিনিট দশেক ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঠান্ডা করে ছেঁকে নিয়ে তার মধ্যে লেবুর রস, বিটনুন, পুঁদিনা পাতা মিশিয়ে খেতে পারেন ডায়াবিটিসের রোগীরা।
লেবু-আদার শরবত
আদা ডায়াবিটিস রোগীদের পক্ষে দারুণ উপকারী। টাইপ-২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে আদা। ডায়াবিটিসের কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে। আদা খেলে সেই সমস্যার হাত থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। তাই গরমের দিনে লেবু-আদার শরবত খেতেই পারেন। তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া।