শরীরে জলের ঘাটতি না হলে হজম ভাল হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার জন্যও ‘ডিটক্স ওয়াটার’ ভাল দাওয়াই। ছবি: শাটারস্টক।
আমাদের প্রত্যেকেরই দিনে কমবেশি দুই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া উচিত, যাতে শরীর তার প্রয়োজনীয় জল পায় এবং দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে অত মেপে জল খাওয়া আর হয়ে ওঠে না! শীতকালে জল খাওয়ার ব্যপারে আরও বেশি অনীহা আসে। সুস্থ থাকতে হলে জলের সঙ্গে কোনও রকম আপস করলে চলবে না। আর এই কারণে অনেকেই ভরসা রাখেন ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এর উপর।
শরীরে জলের ঘাটতি না হলে হজম ভাল হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার জন্যও ‘ডিটক্স ওয়াটার’ ভাল দাওয়াই। তা ছাড়া, ভিটামিনে ভরপুর এই জল কিন্তু ত্বকেরও পরম বন্ধু। নানা রকম ফল ভেজানো জল খাওয়ার ফলে পেট ভর্তি থাকে, খিদেও কম পায়। ফলস্বরূপ ওজন ঝরে অনায়াসেই। আর সেই লোভে পড়েই অফিসে বসেই হোক আর বাড়িতে ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এ চুমুক চলতেই থাকে।
কোনও কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য ভাল নয়। এমনকি জলও নয়। সঠিক নিয়ম মেনে এবং সঠিক মাত্রায় না খেলে ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এও শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
১) প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ডিটক্স ওয়াটার খেলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে। অতিরিক্ত প্রস্রাবের ফলে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে ক্লান্তি ভাব আসে। সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব, বমি ভাব, মাথার যন্ত্রণা হতে থাকে। শরীরের কার্যক্ষমতাও কমে যায়।
২) প্রত্যেকের ওজন আর কার্যক্ষমতার উপর নির্ভর করে তার শরীরের জলের চাহিদার পরিমাণ। কে কতটুকু জল খাবেন, তা নির্ভর করবে ওই জলের চাহিদার উপরেই। বেশ কিছু অসুখে জলের পরিমাণ কমাতে হয়। বেশি জল সে ক্ষেত্রে শরীরেই জমে যায়।
ডিটক্স ওয়াটার সাময়িক ভাবে ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। ছবি: শাটারস্টক।
৩) ডিটক্স ওয়াটার অতিরিক্ত পান করলে শরীরে ভিটামিন ও খনিজের অভাব হতে পারে। তাই রোজের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন ও খনিজ না থাকলে নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হতে পারে।
৪) ডিটক্স ওয়াটার সাময়িক ভাবে ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। তবে এই অভ্যাস দীর্ঘ দিন চলতে থাকলে বিপাকহার কমে যায়। শরীরের পেশিগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। এই পদ্ধতিতে ওজন হ্রাস দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
৫) পেশিতে ব্যথা, বুকে ব্যথা, লিভারের সমস্যা পর্যন্ত হতে পারে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জল খেলে হৃদ্যন্ত্রের উপরেও চাপ পড়তে থাকে। ফলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।