গ্রামাঞ্চলে এখনও নিমের দাঁতনের প্রচলন রয়েছে ছবি: সংগৃহীত
নিম ভারতের অতি প্রচলিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ। ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় বহু দেশে যুগ যুগ ধরে ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে নিমের প্রচলন রয়েছে। কিন্তু নিমের কি সত্যিই কোনও ভেষজ গুণ রয়েছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন এক নয় নিমের ভেষজ গুণের সংখ্যা একাধিক। নিমে প্রায় ১৪০ রকমের সক্রিয় উপাদান রয়েছে যেগুলি অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ও প্রদাহ নাশক হিসেবে অত্যন্ত কার্যকরী। দেখে নিন নিমের হরেক গুণ।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। চুলের সমস্যা কমাতে: নিমে থাকে ‘অ্যাজাডাইর্যাক্টিন’ ও ‘নিমবাইডিন’ নামক দু’টি উপাদান। উকুন নিধনে ও মাথার ত্বকের চুলকানির সমস্যায় এই উপাদানগুলি খুবই কার্যকরী। নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগাতে পারলে চুলকানির সমস্যা কমে যায়।
২। দাঁত ভাল রাখতে: দাঁতের জন্য নিমের ডাল খুবই উপকারী। গ্রামাঞ্চলে এখনও নিমের দাঁতনের প্রচলন রয়েছে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে, দাঁতের ফাঁকে জীবাণু সংক্রমণ রোধ করতে, দাঁতের গোড়া মজবুত করতে ও দাঁত থেকে হওয়া রক্তপাত কমাতে নিম বেশ কার্যকরী।
৩। লিভার ও কিডনি ভাল রাখতে: নিমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট রয়েছে। এই উপাদানগুলি কোষের জারণ ঘটিত চাপ হ্রাস করে। ফলে ভাল থাকে কিডনি ও লিভার। পাশাপাশি আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে রক্ত পরিশুদ্ধ করতেও নিম অতি প্রাচীন কাল থেকে নিমের প্রচলন রয়েছে।
৪। ক্ষত নিরাময়ে: অনেক সময়ই কেটে-ছড়ে গেলে ক্ষতস্থানে নিমপাতার রস লাগানো হয়। ২০১৩ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিমের তেল মালিশ করলে ত্বকের ক্ষত নিরাময় হয় অনেক তাড়াতাড়ি। পাশাপাশি আলসার নিরাময়েও নিম কাজে আসতে পারে বলে মত অনেকের। ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণে তৈরি হওয়া হরেক রকমের ঘা থেকে নিস্তার পেতেও কাজে আসতে পারে নিম।
৫। ত্বকের উন্নতিতে: নিমপাতার ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকনাশক গুণাবলী রয়েছে। তাই ব্যাক্টেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমণের হাত থেকে ত্বককে সুরক্ষিত করতে নিমপাতা খুবই কার্যকরী! ব্রণর সমস্যা থেকে দ্রুত নিস্তার পেতে নিমপাতা বেটে লাগানো যেতে পারে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নিয়মিত নিমপাতার সঙ্গে কাঁচা হলুদ বাটা মাখা যেতে পারে। তবে মিশ্রণে নিমপাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ যেন কম হয়। মিশ্রণটি ব্যবহার করার পর কয়েক ঘণ্টা রোদ এড়িয়ে চলাই ভাল।
তবে মনে রাখতে হবে সব মানুষের শরীর এক নয়। তাই দৈনন্দিন ব্যবহারই হোক বা পথ্য হিসেবে, যে কোনও উপাদান ব্যবহার করার আগেই বিশেষজ্ঞর পরামর্শ জরুরি।