প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
প্রতিদিন নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করেন, কিন্তু তারপর সারাদিনই প্রায় তার ক্লান্তি থেকে যায়। তা থেকে শরীরচর্চার প্রতি অনীহাও জন্মাতে পারে। এর কারণ বোধহয় আপনি ঠিকভাবে বিশ্রাম নিচ্ছেন না। শরীরচর্চার পর বিশ্রাম নেওয়াটাও জরুরি। আমাদের পেশির শক্তিবৃদ্ধি কিন্তু হয় শরীরচর্চা শেষ হওয়ার পর এই বিশ্রামের থেকেই। তাই এই ঠিকভাবে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এই নিয়মগুলো মানতে পারেন।
জল খান
ঠিকমতো পেশির শক্তির জন্য, ডিহাইড্রেশনের সমস্যা এড়াতে ও পেশিতে টান লাগা কমাতে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া উচিত। এমনিতেও শরীরচর্চার সময় ঘাম হওয়ায় শরীর থেকে প্রচুর তরল পদার্থ নির্গত হয়। তাই শরীরচর্চা শুরু করার ২ ঘণ্টা আগে ৫০০-৭০০ মিলিলিটার জল খান। শরীরচর্চা করাকালীন প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ২০০-৩০০ মিলিলিটার জল আস্তে আস্তে খান। শরীরচর্চার শেষে ৫০০-৭০০ মিলিলিটার জল খান। জল ছাড়াও ডাবের জল কিংবা মিষ্টি না দেওয়া স্পোর্টস ড্রিঙ্কও খেতে পারেন।
স্ট্রেচিং করুন
শরীরচর্চা শেষ হওয়ার পর অবশ্যই স্ট্রেচিং করুন। পা, কাঁধ, পিঠ, পেটের তলদেশ, বুকের পেশির মতো শরীরচর্চায় ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ পেশিগুলো ঠিকভাবে স্ট্রেচ করা জরুরি। এতে পেশিগুলোর আরাম হয়, পেশির চাপও কমায়। এর ফলে আঘাতপ্রাপ্তির আশঙ্কাও কমে। এই ভাবে স্ট্রেচিং করলে পেশির ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। অ্যাক্টিভ রেস্ট ডে-তে মিনিটকুড়ি ধরে একটু বড় সময়ের স্ট্রেচিংও করতে পারেন। এছাড়া সপ্তাহে বেশ কয়েকবার যোগব্যায়াম করতে পারেন।
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খান
খাবারের তালিকায় রাখুন কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল ও ফ্যাটজাতীয় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। এগুলো পেশির বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। শরীরচর্চা করার পর খান ওটস, ব্রাউন রাইস, তাজা ফল, রাঙা আলু, কাবুলি ছোলা, মুসুর ডাল, কড়াইশুঁটি, বরবটি ইত্যাদি খাবার। এগুলো পেশির শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া মাংস, দই, ডিম, মাছ, দুধ খাওয়া দরকার। খেতে পারেন গাজর, পালং শাক, বাঁধাকপি। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই সব খাবার পেশির বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা নেয়।
প্রতীকী ছবি।
অ্যাক্টিভ রেস্ট ডে দরকার
শরীরচর্চার রুটিনের পাশাপাশি তারিখে অ্যাক্টিভ রেস্ট ডে-রও প্রয়োজন আছে। এর ফলে শরীরের পেশিগুলোর ঠিকমতো পুষ্টিসঞ্চালন ঘটে এবং শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারিত হয়। বিশ্রামের দিন মানেই যে আলস্যে সময় কাটাবেন, একেবারেই তা নয় কিন্তু। এই দিনগুলোয় হালকা যোগব্যায়াম, হাঁটা, সাঁতার কাটা, জগিং এগুলো চলতে পারে।
ঘুমোনোর দরকার
প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমনোর দরকার। শরীরে পেশির বৃদ্ধিকারী হরমোন ঠিক এই গভীর ঘুমের সময়টাই নিঃসৃত হয়। বেশি চাপে থাকলেই কম ঘুমোলেই শরীরে কর্টিসল জাতীয় পেশির ক্ষয়কারী হরমোন নির্গত হয়। শরীরচর্চার পর তাই ঠিকমতো ঘুমের দরকার। কফি ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। দিনে প্রতিদিন মিনিটকুড়ি রোদের আলোয় থাকুন। ঘুমোতে যাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। শুতে যাওয়ার অন্তত আধঘণ্টা আগে থেকে মোবাইল ফোনে চোখ রাখা বন্ধ করুন।