Food for Exercise

খালি পেটে শরীরচর্চা করলে ওজন ঝরবে দ্রুত! যা শোনা যায়, তার সবই কি ঠিক?

শরীরচর্চার আগে, পরে, না কি ব্যায়াম করতে করতেই খাওয়া দরকার? নানা জনের নানা মত। তার মধ্যে ঠিক কোনটি?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৫ ১৬:৪৪
Share:

শরীরচর্চার আগে, মাঝে না পরে— কখন খাওয়া জরুরি? ছিবিটি অভিনেতা সিদ্ধার্থ মালহোত্রের। ছবি:প্রতিনিধিত্বমূলক

ওজন কমানো হোক বা পেশী গঠন— নির্মেদ, আকর্ষক চেহারা পেতে শরীরচর্চা জরুরি। কী ভাবে কোন ব্যয়াম করতে হবে, কী খেতে হবে, সে সবও এখন জানেন অনেকেই। সৌজন্যে সমাজমাধ্যম। সেখানে নানা জনের নানা মত, নানা পরামর্শ। সুযোগ-সুবিধা মতো বেছে নিলেই হল। কিন্তু সে সব সর্বদা সত্যি হয় কি? যা শোনা যায়, বলা হয়— তার সবটুকু ঠিক তো?

Advertisement

কেউ বলেন, শরীরচর্চার সময় পেট খালি থাকলে ওজন কমবে দ্রুত। কেউ বলেন, প্রোটিনে জোর দিতে হবে। শরীরচর্চার আগে বা পরে প্রোটিন বার খাওয়া দরকার। কিন্তু মানবেন কোনটি? টরেন্টোর পুষ্টিবিদ অ্যাবি লাঙ্গার বলছেন, ‘‘খালি পেটে শরীরচর্চায় বাড়তি লাভ হবে, তেমনটা মোটেও নয়। বরং শরীরচর্চার আগে, পরে এবং কসরত করার সময় বিরতি নিয়েও খাওয়া যায়। তবে সময় নয়, গরুত্বপূর্ণ হল কী খাওয়া হচ্ছে এবং তার পরিমাণ।’’

শরীরচর্চা এবং খাবারের সম্পর্ক

Advertisement

দৈনন্দিন কাজকর্মের প্রয়োজনীয় শক্তি আসে খাবার থেকে, ক্যালোরি দিয়ে যা পরিমাপ করা হয়। শরীরচর্চার সময়েও শক্তির প্রয়োজন, না হলে দ্রুত কেউ হাঁপিয়ে পড়তে পারেন। ব্যায়ামের সময় জ্বালানির কাজ করে খাদ্যে থাকা ক্যালোরি বা শক্তি। ‘গুড ফুড ব্যাড ডায়েট’ গ্রন্থের লেখক অ্যাবি বলছেন, শরীরচর্চার আগে খাওয়াই যায়, তবে ভরপেট নয়। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ফাইবার— সমস্ত উপকরণ সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে ব্যায়াম করা শুধু অনুচিত নয়, তা কষ্টকরও। কারণ, কার্বোহাইড্রেট দ্রুত হজম হলেও, বাকি জিনিসগুলি হয় না। ফলে, ভরপেট খেলে তার অন্তত ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে শরীরচর্চা না করাই ভাল। এতে হজমের সমস্যা হতে পারে। অ্যাবি জানাচ্ছেন, ব্যায়াম করতে যাওয়ার ঠিক আগেই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেছে না নিয়ে কার্বোহাইড্রেটে জোর দেওয়া দরকার। কার্বোহাইড্রেট দ্রুত হজম হয় এবং শক্তি জোগায়। ব্যায়াম করার আগে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার, যেমন কলা বা ইয়োগার্ট খাওয়ার পক্ষপাতী তিনি।

‘পারফরম্যান্স নিউট্রিশন: অ্যাপ্লায়িং দ্য সায়েন্স অফ নিউট্রিয়েন্ট টাইমিং’ নিবন্ধের লেখক ফিজ়িওলজিস্ট ক্রিস্টা অস্টিনের বক্তব্য, শরীরচর্চার পরে স্টেক বা প্রোটিন খাওয়া যেতে পারে। এই সময় প্রোটিন হজম দ্রুত হয়। পেশি গঠনেও সেই প্রোটিন সহায়ক হয়। তবে যদি শরীরচর্চা করার এক ঘণ্টা আগে কিছু খেতে হয়, তখন শুধু প্রোটিন জাতীয় খাবারই যথেষ্ট। তা ছাড়া খুব অল্প এবং সহজপাচ্য খাবার খেয়ে দীর্ঘ ক্ষণ শরীরচর্চা করলে, দ্রুত কেউ ক্লান্ত এবং ক্ষুধার্ত হয়ে পড়তে পারেন।

অনেকেরই ধারণা, শরীরচর্চা শেষ করেই প্রোটিন শেক খেতে হবে। এই ধারণাও সঠিক নয়, মনে করেন অ্যাবি। ব্যায়ামের পর পেশির গঠনমূলক কাজ চলতে থাকে, তাকে বলা হয় ‘অ্যানাবলিক উইন্ডো’। এক এক জনের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা এক এক রকম হয়। কারও ক্ষেত্রে তা ঘণ্টাখানেকেরও বেশি হয়। ফলে, শরীরচর্চা শেষ হতে না হতেই যে প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে, তা নয়। অ্যাবির মতে, যখনই খাবার খাওয়া হোক, তাতে প্রোটিন থাকা দরকার।

শরীরচর্চার সময়েও খাওয়া দরকার?

সারা দিনে ঘড়ি ধরে নিয়ম মেনে পুষ্টিকর খাবার খান যাঁরা, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যায়ামের সময় বাড়তি খাবারের দরকার হয় না, বলছেন পুষ্টিবিদেরা। আবার যিনি ম্যারাথনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তিনি দীর্ঘ ছোটাছুটির মাঝে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ হালকা খাবার খেতে পারেন।

অ্যাবি এবং ক্রিস্টা, দু’জনেরই মত, কখন খাওয়া হচ্ছে তার থেকে বেশি জরুরি, পরিমিত এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া হচ্ছে কি না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement