প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেই রয়েছে এমন এক পদ্ধতি, যা দামে ও গুণে টেক্কা দিতে পারে যে কোনও কৃত্রিম মাউথওয়াশকে! ছবি: শাটারস্টক।
মুখের দুর্গন্ধ কমাতে ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অনেকেরই ভরসা বাজার চলতি নানা কৃত্রিম মাউথওয়াশ। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেই রয়েছে এমন এক পদ্ধতি, যা দামে ও গুণে টেক্কা দিতে পারে যে কোনও কৃত্রিম মাউথওয়াশকে! এই পদ্ধতিতে জলের বদলে কুলকুচি করতে হয় তেল দিয়ে। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। পশ্চিমের দেশগুলিতে এই পদ্ধতিকে বলে ‘অয়েল পুলিং’। দেখে নিন এর গুণাগুণ।
কী ভাবে করতে হয় তেলের কুলকুচি?
মুখভর্তি তেল নিয়ে ঠোঁট দু’টি শক্ত করে চেপে রাখতে হয়। তার পরে তেল মুখের ভিতর থেকে বাইরের দিকে ঠেলতে হয়। আবার বাইরের দিক থেকে ভিতর দিকে টানতে হয়। এ ক্ষেত্রে দাঁতের ফাঁক দিয়ে তেল যাওয়া আসা করে। এর ফলেই দাঁত এবং মা়ড়ির উপকার হয়। আয়ুর্বেদ মতে, তিলের তেল বা নারকেল তেলই এই কুলকুচিতে ব্যবহার করার কথা। তবে নারকেল তেল সবচেয়ে বেশি কাজ দেয়।
তেল দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁতের হলদে ভাব দূর হয়, এর বাইরেও রয়েছে আরও কয়েকটি গুণ। সেগুলি কী কী?
১) মানুষের মুখে নানা ধরনের ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে। দাঁতের সমস্যা থেকে মুখের দুর্গন্ধ, হরেক রকমের সমস্যা ডেকে আনে এই ব্যাক্টেরিয়াগুলি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাত্র দুই সপ্তাহ রোজ দশ মিনিটের জন্য তেল দিয়ে কুলকুচি করলে অনেকটাই হ্রাস পায় ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা। মাড়ির প্রদাহ কমাতেও এই পদ্ধতি কার্যকর।
ক্যাভিটি থেকে মুক্তি পেতেও অয়েল পুলিং দারুণ উপকারী।
২) দুর্গন্ধের জ্বালায় কথা বলতে লজ্জা পান, এমন অনেকেই আছেন। বিজ্ঞানের ভাষায় এক বলে হ্যালিটোসিস। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ময়লা থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই সমস্যার মূল কারণ, জিভে জমে থাকা ময়লার স্তর। নারকেল বা সিসামে তেল দিয়ে কুলকুচি করলে এই সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে পারেন।
৩) সাধারণ ভাষায় যাকে দাঁতে পোকা লাগার সমস্যা বলে, তাকেই চিকিৎসকরা বলেন ক্যাভিটি। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে এই সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। দাঁতের মাঝে জমে থাকা মিষ্টি জাতীয় খাদ্যকণার উপর বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার ক্রিয়ায় যে অ্যাসিড উৎপন্ন হয়, তা দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে এবং ক্যাভিটি তৈরি করে। অয়েল পুলিং-এ এই সমস্যা কমে।