রক্তের চাপ বেশি থাকলে কিডনির রক্তবাহিকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। — প্রতীকী চিত্র।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা পারিবারিক। তাই সাবধানে থাকলেও ৪০-এর পর তার ছোবল এড়াতে পারেননি। কিন্তু কিডনির সমস্যা তো ছিল না। হঠাৎ সেই সমস্যা দেখা দেওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কিডনি ভাল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন সকলে। তা খেলেও যে কিডনি ভাল থাকবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা কিন্তু নেই। বরং কিডনির সমস্যা থাকলে মেপে জল খেতে বলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে এই সমস্যা অনেক ক্ষেত্রেই এড়িয়ে চলা যায়।
উচ্চ রক্তচাপ কী ভাবে কিডনির ক্ষতি করে?
চিকিৎসকেরা বলছেন, দীর্ঘ দিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে। কারণ, কিডনি রক্তে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করে। তা ছাড়া রক্তের চাপ বেশি থাকলে কিডনির গায়ে ভেসে থাকা রক্তবাহিকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে তা বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী করবেন?
১) সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এক দিনে শরীরে যেন কোনও ভাবেই ৩ গ্রামের বেশি নুন না যায়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি, ফল, সব্জি, দানাশস্য এবং ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে বেশি করে।
২) নিয়মিত শরীরচর্চা করলেও কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ বশে থাকে। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গেলে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট শরীরচর্চার পিছনে ব্যয় করতেই হবে। তবে কী ধরনের শরীরচর্চা কার জন্য সঠিক, তা চিকিৎসক এবং প্রশিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তবেই ঠিক করবেন।
৩) অতিরিক্ত ধূমপান করার অভ্যাস থাকলেও কিন্তু কিডনির স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। কারণ, ধূমপানের অভ্যাস রক্তের চাপ বাড়িয়ে দিতে অনুঘটকের মতো কাজ করে।
কিডনি ভাল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। — প্রতীকী ছবি।
৪) বর্তমান সময়ে কর্মক্ষেত্র, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কম-বেশি সকলেরই চাপ থাকে। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশলও জানা জরুরি। শরীরচর্চা করতে না পারলে এমন কিছুর মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত করুন, যার ফলে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যাঁদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়, তাঁরা যদি ওষুধ খেতে ভুলে যান, অনিয়মিত ভাবে ওষুধ খান, তা হলে রক্তের চাপ কিন্তু নিয়ন্ত্রণে থাকা মুশকিল। ওষুধ খাওয়ার পরেও যদি রক্তের চাপ বেড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে কিডনির উপর চাপ পড়তেই পারে।