বিমানে মদ্যপান করলে কী ক্ষতি হবে? ছবি: সংগৃহীত।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে প্রস্রাবকাণ্ডের পরেই বিমানের মদ্যপান নীতিতে অনেক বদল আনা হয়েছিল। কতটা অ্যালকোহল পরিবেশন করা যাবে যাত্রীদের, তা নিয়ে যথেষ্টই কঠোর হয় বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা ‘ডিজিসিএ’। তবে বহু বিমান সংস্থাই উড়ানে অ্যালকোহল পরিবেশন করে থাকে। আর যাত্রীরাও অনেক সময়ে তা উপভোগ করতে করতে নির্ধারিত সীমা ছাড়িয়ে যান। অতিরিক্ত মদ্যপানের পরেই ঘুমিয়ে পড়েন অনেক যাত্রী। আর সেটিই যে কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, তা জানা নেই অনেকেরই।
এই বিষয়ে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, বিমানে অল্পস্বল্প মদ্যপান করলে ক্ষতি নেই। কিন্তু যদি তা অতিরিক্ত হয়ে যায়, তা হলে হার্টের ক্ষতি হতে পারে। মাঝ আকাশে উড়ানে অক্সিজেনের চাপ এমনিতেও কম থাকে। তার মধ্যে যদি অতিরিক্ত অ্যালকোহল শরীরে যায়, তা হলে হৃৎস্পন্দন আচমকাই বেড়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, রক্তচাপ কমে যেতে পারে। যদি দীর্ঘ সময়ের উড়ান হয়, যেমন ৬ ঘণ্টা বা তার বেশি, আর গোটা উড়ানেই যাত্রী মদ্যপান করতে থাকেন, তা হলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
বিমান যত বেশি উচ্চতায় উড়বে, ততই বাতাসের চাপ ও অক্সিজেনের মাত্রা কমবে। শরীরেও অক্সিজেনের ঘাটতি হবে। বিমানে উঠলে অনেকেরই বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা হয়। বমি বমি ভাব, পেশিতে টান ধরা, মাথাব্যথার মতো নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বেশি উচ্চতায় অনেকের স্নায়ুর নানা সমস্যা দেখা দেয়। শ্বাসের সমস্যাও হয় অনেকের। অ্যালকোহল এই সমস্যাগুলিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
চিকিৎসকের কথায়, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার। তবে ব্যক্তিভেদে সামান্য কমবেশি হতে পারে। বিশ্রামের সময়ে স্বাভাবিক ভাবেই হৃৎস্পন্দনের হার কম থাকে। কারণ শরীর নড়াচড়া কম হয়। কিন্তু ওই সময়েও যদি হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায় তা হলে মুশকিল। মদ্যপান করে ঘুমিয়ে পড়লে তখন হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায়। অনিয়মিত বা অনিয়ন্ত্রিত হৃৎস্পন্দন হৃদ্রোগের কারণও হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি প্রভাব পড়তে পারে ফুসফুসে। কারণ শরীরে যদি অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় তখন শ্বাসকষ্ট শুরু হবে। বুকে চাপ চাপ ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তাই বিমানে মদ্যপান করলেও তা সীমিত মাত্রাতেই করা উচিত।