ব্রিটেনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, এই ডুমসার্ফিংয়ের অভ্যাস নানা ভাবে মনের উপর প্রভাব ফেলছে। প্রতীকী ছবি।
সেই লকডাউনের সময় থেকে টানা চলছে মানসিক চাপ। কখনও সংক্রমণের সংবাদ, কখনও সামগ্রিক অতিমারি পরিস্থিতি— নানা কারণে চোখ আটকে থাকছে সংবাদমাধ্যমে। তার উপরে এখন যোগ হয়েছে ইউক্রেনের যুদ্ধ। বার বার চোখ চলে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। কাজের ফাঁকে কখন যে হঠাৎ খুঁজতে শুরু করছেন যুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য, হয়তো বা খেয়ালও থাকছে না। এমন ভাবে দুঃসংবাদ খুঁজতে থাকার অভ্যাসকে ‘ডুমসার্ফিং’ বা ‘ডুমস্ক্রলিং’ বলা হয়। হালের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, এই ‘ডুমসার্ফিং’-এর অভ্যাসের প্রভাব কী ভাবে পড়ছে সমাজে।
ব্রিটেনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, এই ডুমসার্ফিংয়ের অভ্যাস নানা ভাবে মনের উপর প্রভাব ফেলছে। ‘দ্য কনভারসেশন’ নামক এক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের গবেষণাপত্র। সেখানেই গবেষকরা জানিয়েছেন, ডুমসার্ফিংয়ের অভ্যাসের কারণে বাড়তে পারে উদ্বেগ, অবসাদ। কম সময়ে এমন কোনও অভিজ্ঞতার কথা ভেবে দেখুন। খুব দুঃখের কোনও নাটক বা সিনেমা দেখলে কী হয়? মন খারাপ লাগে। তেমনই যদি খারাপ খবর টানা দেখতে থাকেন, তবে মনের উপরে চাপ আরও অনেকটা বেড়ে যায়। অজান্তেই তৈরি হয় অবসাদ।
ডুমসার্ফিংয়ের অভ্যাসের কারণে বাড়তে পারে উদ্বেগ, অবসাদ। প্রতীকী ছবি।
সেরোটনিন হল এমন একটি দ্রব্য, যা তৈরি হয় মনের ভাব নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। টানা মানসিক চাপের ফলে এই রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। সময়ের সঙ্গে তা প্রভাব ফেলতে পারে মনের উপর। টানা যদি সেরোটনিনের মাত্রা কম থাকে, তবে মেজাজ খারাপ থাকবে। আর দিনের পর দিন মেজাজ খারাপ থাকলে ভাবনা-চিন্তার ধারার উপর প্রভাব পড়তে পারে। চিন্তা-ভাবনা কিছুটা একপেশেও হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে দেখেছেন গবেষকরা।
একপেশে ভাবনার ছাপ কী ভাবে পড়ে রোজের জীবনে?
এর ফলে ধীরে ধীরে চারপাশে মন ভাল করার মতো খবরের দিকে চোখ পড়ার অভ্যাস কমতে থাকে। মনে হতে থাকে, যেন আর কোনও ভাল খবর তৈরি হচ্ছে না চারপাশে। এই মানসিক পরিস্থিতি আমাদের কাজ থেকে সামাজিক মেলামেশা, সবের উপর প্রভাব ফেলে। যেহেতু একই দিকে মন চলে যেতে থাকে, তাই অন্য কোনও ভাবনায় আর সময় দিতে পারে না মন। চারধারে কী ঘটছে, তা খেয়াল করার অভ্যাস কমে। তাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।