প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
দু’ভাবে শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে ওঠে। কোনও অসুখে আক্রান্ত হয়ে, আর সেই অসুখের টিকা নিয়ে। করোনার ক্ষেত্রেও তাই।
চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘অ্যান্টিবডি’ বলা হয়, তা এই দু’ভাবে শরীরে তৈরি হয়। কিন্তু দু’ভাবে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির মধ্যে পার্থক্য আছে।
অ্যান্টিবডি কী: এক বিশেষ ধরনের প্রোটিনের কোষ, যা সংক্রমণকারী জীবাণুটিকে প্রতিহত করতে পারে। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এই বিশেষ প্রোটিন কোষে ধরাও থাকে জীবাণুটির বৈশিষ্ট্যের স্মৃতি। ফলে সেই সময়ের মধ্যে জীবাণুটি ফের আক্রমণ করলে অ্যান্টিবডি তাকে আবারও প্রতিহত করতে পারে।
সংক্রমণ থেকে অ্যান্টিবডি: কোনও জীবাণু শরীরে ঢুকলে তার প্যাথোজেনের সঙ্গে লড়াই করতে শরীর প্রথমে ইমিউনোগ্লোবিউলিন এম বা ‘আইজিএম’ তৈরি করে। এরা যুদ্ধের প্রথম সারির সৈনিক। এর পরের ধাপে শরীর ইমিউনোগ্লোবিউলিন জি বা ‘আইজিজি’ নামের অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই দ্বিতীয় পর্যায়ের অ্যান্টিবডির মধ্যে ধরা থাকে ওই বিশেষ জীবাণুটির স্মৃতি।
টিকা থেকে অ্যান্টিবডি: এ ক্ষেত্রে সংক্রমণকারী জীবাণুটির গঠনের একটি বা দু’টি প্রোটিন শরীরে আলাদা করে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। শরীর সেগুলির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে নেয়।
প্রতীকী ছবি।
পার্থক্য কী: সংক্রমণে ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির ব্যাপ্তী কিছুটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীর প্রাথমিক পর্যায়ে যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তা জীবাণুটির গঠন সম্পর্কে পুরো নিশ্চিত থাকে না। ফলে একটি জীবাণুর কারণে বহু ধরনের গঠনের কথা মাথায় রেখে প্রাথমিক অ্যান্টিবডি-টি বানিয়ে নেয় সে। কিন্তু টিকার অ্যান্টিবডি নির্দিষ্ট জীবাণুর নির্দিষ্ট গঠনকে প্রতিহত করার জন্যই।
কোনটি বেশি ভাল: বিজ্ঞানীরা বলছেন, দু’টি দু’রকমের। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সংক্রমণের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি বেশি কাজের হয়েছে। জীবাণুর রূপান্তরের ফলে টিকার কর্মক্ষমতা কমেছে। আবার কোনও ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, টিকাই বেশি কাজের।
চিকিৎসকদের পরামর্শ: করোনার মতো রোগকে আটকানোর একটাই রাস্তা— টিকা নেওয়া। যাঁদের সংক্রমণের ফলে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তাঁরা যদি পরে টিকা নেন, তা হলে আরও ভাল ফল পাবেন।