ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েও কি ‘লং কোভিড’ সম্ভব। ছবি: সংগৃহীত
রাজ্যজুড়ে ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে করোনা পরিস্থিতি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, করোনার নতুন রূপ ওমিক্রনের তীব্র সংক্রমণ ক্ষমতাই এর জন্য মূলত দায়ী। পাশাপাশি জনমানসে রয়েছে সচেতনতার অভাবও। অনেকেই মৃদু উপসর্গ ভেবে অবহেলা করছেন ওমিক্রনকে। কিন্তু কোভিডকালীন উপসর্গ ক্ষেত্রবিশেষে মৃদু হলেও কোভিড পরবর্তী উপসর্গের দিক থেকে মোটেও পূর্ববর্তী রূপগুলির থেকে কমজোর নয় ওমিক্রন।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম, এ কথা যেমন সত্য, তেমনই একথাও সত্য যে কোভিড নেগেটিভ হয়ে যাওয়া মানেই এর ধকল থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া নয়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হচ্ছে 'লং কোভিড'। অর্থাৎ আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়ে যাওয়ার পরও বিভিন্ন অঙ্গে নানা রকম নেতিবাচক প্রভাব থেকে যায় কোভিডের ফলে।
কিন্তু কত দিন এই প্রভাব থাকে? দেখা যাচ্ছে সাধারণ ভাবে উপসর্গগুলি দুই থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হলেও অনেকের ক্ষেত্রেই এক মাস বা তারও বেশি দিন স্থায়ী হচ্ছে কোভিড পরবর্তী উপসর্গগুলি। এই ধরনের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, মনোযোগের সমস্যা, ঘুমাতে না পারা, এবং মস্তিষ্কের সমস্যা। অনেকেই আবার স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি হারিয়ে ফেলছেন দীর্ঘস্থায়ী ভাবে। শুধু তাই-ই নয় শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গেও মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলছে কোভিড।
যাঁরা প্রাথমিক ভাবে উপসর্গহীন তাঁদের ক্ষেত্রেও এই ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। বিশেষত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি অনেকটাই। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে কোভিড পরবর্তী যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়ে যাওয়া মানেই কোভিডের প্রকোপ থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া নয়। এর অর্থ লড়াইতে অর্ধেক জয় পাওয়া। কোভিড নেগেটিভ হয়ে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই স্বাভাবিক জীবনযাপনের চেষ্টা করা ঠিক নয়। কঠোর কায়িক শ্রম হয় এমন কাজ থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। সঠিক পথ্য এবং জীবন চর্চার মাধ্যমে চিকিৎসকদের অধীনে সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠাই কোভিড আক্রান্তদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে জল ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্য। যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাঁদের কয়েকদিন একটু মেপে শরীরচর্চা করতে হবে।