প্রতীকী ছবি।
প্রতিষেধকের একটি বা দু’টি ডোজ় নেওয়ার পরেও ভারতের প্রায় আট শতাংশ মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে তাদের মতে, এমন ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। কারণ, প্রতিষেধক নেওয়ার ফলে শরীরে রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের যে ক্ষমতা তৈরি হয়, তা একেবারে অপ্রতিরোধ্য নয়। প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও যাঁদের উপসর্গযুক্ত কোভিড হচ্ছে, তাঁদের প্রায় ২৫ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন বলেও ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে। তবে বাকি ৭৫ শতাংশের অসুস্থতার মাত্রা যেহেতু কম, তাই টিকা নেওয়ার বিকল্প নেই বলে মন্ত্রক মনে করছে।
দেশের প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই দু’ডোজ় প্রতিষেধক নিয়ে ফেলেছেন। অনেকের বুস্টার ডোজ় নেওয়াও সারা। তা সত্ত্বেও করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। দেশে ঠিক কত জন এ ভাবে প্রথম-দ্বিতীয় কিংবা বুস্টার ডোজ় নেওয়ার পরেও সংক্রমিত হয়েছেন, তা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন লোকসভার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। দেশে বেকার কত, কৃষি আন্দোলনে কত জন কৃষক মারা গিয়েছেন, অক্সিজনের অভাবে কত কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন, এ সবের মতো মালার প্রশ্নের উত্তরেও কোনও নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে পারেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার।
তবে সরকারের তরফে আজ লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী পওয়ার জানান, ‘জার্নাল অব মেডিক্যাল ভাইরোলজি’-তে এই বছরের মার্চের একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এ দেশে প্রতিষেধক পেয়েছেন, এমন ১১১২ জনের উপরে একটি সমীক্ষা চালনো হয়েছিল। এঁরা প্রত্যেকে অন্তত একটি করে কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের ডোজ় নিয়েছিলেন। সেই সমীক্ষায় দেখা যায়, এঁদের মধ্যে ৮৮ জন বা ৭.৯১ শতাংশ প্রতিষেধক নেওয়া সত্ত্বেও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৯০.৯১ শতাংশের শরীরে করোনার উপসর্গ রয়েছে। যাঁদের উপসর্গ দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ২৫ শতাংশের শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ হয়েছিল বলে সমীক্ষায় জানানো হয়েছে।বাকিদের অধিকাংশই মৃদু সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, প্রতিষেধক নিলেই যে করোনা হবে না, এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, বেশ কিছু পারিপার্শ্বিক কারণের উপরে সংক্রমণ নির্ভর করে। তবে একটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে যে, যাঁরা প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে গুরুতর সংক্রমণের হার অনেক কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দেখেছে, প্রতিষেধক প্রাপকদের তুলনায় যাঁরা প্রতিষেধকের একটি ডোজ়ও নেননি, তাঁরা অনেক বেশি গুরুতর সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন।