ভবিষ্যতে ক্রিস হেমসওয়ার্থের অ্যালঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
অ্যালঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত হতে পারেন হলিউড তারকা ক্রিস হেমসওয়ার্থ। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে নিজের মুখেই এ কথা স্বীকার করলেন বড়পর্দার ‘থর’। ক্রিস জানান, তাঁর শরীরে এমন কিছু জিন রয়েছে যা দেখে চিকিৎকরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে মস্তিষ্কের এই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দশ ভাগের মধ্যে ৮ ভাগ।
সামগ্রিক ভাবে স্মৃতিশক্তি লোপ, ভাবনাচিন্তার অসুবিধা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতা ইত্যাদি একাধিক সমস্যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ডিমেনশিয়া’ বলা হয়। আর সবচেয়ে বহুল ও দুরারোগ্য ডিমেনশিয়ার অন্যতম উদাহরণ হল অ্যালঝাইমার্স।
শুধু বিদেশ নয়, ভারতেও এই রোগের প্রকোপ বিপুল। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ কোটি সত্তর লক্ষের কাছাকাছি, কিন্তু ২০৫০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হতে পারে পনেরো কোটি। অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড রিলেটেড ডিজঅর্ডারস সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র ২০২০ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষে ষাটোর্ধ্ব প্রায় তিপ্পান্ন লক্ষ মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত।
স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া সাধারণ ভাবে অ্যালজাইমার্স রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। শুরুর দিকে অ্যালজাইমার্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সদ্য ঘটা কথোপকথন কিংবা ঘটনাগুলি ভুলে যেতে পারেন। তা ছাড়া, জিনিসপত্র ভুল জায়গায় রাখা, স্থান এবং বস্তুর নাম ভুলে যাওয়া, কথা বলার সময় উপযুক্ত শব্দ খুঁজে না পাওয়া, বার বার একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা— কোনও ব্যক্তির এই ধরনের উপসর্গগুলি দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, প্রাথমিক পর্যায় থেকেই রোগকে ঠেকিয়ে রাখতে সতর্ক হতে হবে। প্রতীকী ছবি।
এই উপসর্গ ছাড়াও দৃষ্টিশক্তি কমে আসা, সময় ও তারিখ মনে রাখতে না পারাও এই রোগের লক্ষণ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগী রঙের পার্থক্য বুঝতে পারেন না। কারও কারও ক্ষেত্রে দুরত্ব বুঝতে অসুবিধা ও গাড়ি চালাতে সমস্যা হওয়াও অ্যালজাইমার্স রোগের লক্ষণ হতে পারে।
এখনও পর্যন্ত এই রোগের বিশেষ কোনও চিকিৎসা নেই। তবে নিয়ম করে শরীরচর্চা করা, ধূমপান বন্ধ করা, বই পড়া, গান গাওয়া, ছবি আঁকা, বাগান করা কিংবা দাবা খেলার মতো অভ্যাস কিছুটা হলেও ঠেকিয়ে রাখতে পারে রোগ। তবে এই রোগের চূড়ান্ত পর্যায়টি রোগীর পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর। ক্রিস নিজেও আক্ষেপের সুরে বলেছেন, হয়তো নিজের স্ত্রী কিংবা সন্তানদের একটা সময় মনে রাখতে পারবেন না তিনি। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, প্রাথমিক পর্যায় থেকেই রোগকে ঠেকিয়ে রাখতে সতর্ক হতে হবে।