Fasting for weight loss

২৮ দিনে ১৮ কেজি! রণদীপের মতো ওজন কমানো কি নিরাপদ, সহজ পথের সন্ধান দিলেন অভিনেতা

‘স্বতন্ত্র বীর সাভারকর’ ছবির জন্য অল্প সময়ের মধ্যেই ওজন কমিয়েছিলেন বলিউড অভিনেতা রণদীপ হুডা। তার জন্য অভিনেতা দীর্ঘ সময় উপোস করতেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:১৭
Share:
Bollywood actor Randeep Hooda admits he reduced 18 kilos in 28 days through complete fasting

(বাঁ দিকে) অভিনেতার লুক চমকে দেয় অনুরাগীদের। অভিনেতা রণদীপ হুডা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

চরিত্রের জন্য তারকাদের অনেক সময়েই বহু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তা দেখে কখনও কখনও অনুরাগীরাও চমকে যান। যেমন রণদীপ হুডা। গত বছর পর্দায় বীর সাভারকর চরিত্রে রণদীপের একটি লুক নিয়ে এখনও চর্চা অব্যাহত। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নিজের এই বিশেষ লুক নিয়ে কথা বলেছে রণদীপ।

Advertisement

গত বছর মুক্তি পায় ‘স্বতন্ত্র বীর সাভারকর’। ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করেন রণদীপ। এই ছবির শেষের দিকে একটি লুকের জন্য রণদীপ ১৮ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন, তা-ও মাত্র ২৮ দিনে। কী ভাবে এই অসাধ্যসাধন করেন তিনি? প্রশ্নের উত্তরে রণদীপ বলেন, ‘‘খুবই সহজ। আমি খাবার এবং জল খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। খুবই বড় ঝুঁকি নিয়েছিলাম।’’ রণদীপ জানান, আবার সাধারণ ডায়েটে ফেরার পর, পরবর্তী দেড় বছর তাঁকে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ভুগতে হয়।

রণদীপ জানান, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এই ভাবে কারও ওজন কমানো উচিত নয়। তবে ওজন কমানোর জন্য তাঁর পরামর্শ উপোস করা। অভিনেতা বলেন, ‘‘যত দিন আমরা বেঁচে থাকি, তত দিন আমাদের পরিপাকতন্ত্র কাজ করে। পাকস্থলী থেকেই আমাদের যাবতীয় পেটের সমস্যার সূত্রপাত।’’ তাই অভিনেতা মনে করেন উপোস করলে পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ কম পড়ে। রণদীপের কথায়, ‘‘খাবার খাওয়া এবং তার পর ক্লান্ত বোধ করার তুলনায়, উপোস করলে অনেক বেশি এনার্জি পাওয়া যায়। তাই এক বা দু’দিনের জন্য উপোস করাই যায়।’’

Advertisement

যাঁরা উপোস করে ওজন ঝরাতে ইচ্ছুক, তাঁদের উদ্দেশে রণদীপ বিশেষ পরামর্শও দিয়েছেন। অভিনেতার কথায়, ‘‘খেয়াল রাখতে হবে যেন কিছু না খাওয়া হয়। জল, ব্ল্যাক কফি বা লিকার চা চলতে পারে। কিন্তু লেবুর জল বা ডাবের জল খাওয়া চলবে না।’’ রণদীপের মতে, উপোস যত দীর্ঘ হবে, ততই তা ব্যক্তির শরীর-স্বাস্থ্য এবং লুকের জন্য ইতিবাচক।

কী বলছেন পুষ্টিবিদেরা?

তবে রণদীপের বক্তব্যে সত্যতা কতটা? উপোস করলে যে ওজন কমে এবং তা যে পরিপাকতন্ত্রের জন্য ভাল, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পুষ্টিবিদদের একটা বড় অংশ। তবে এই ধরনের পদ্ধতিতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পুষ্টিবিদের মতে, ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ ব্যক্তির ওজন কমাতে সাহায্য করে। কেউ কেউ উপোস করলে আরও চনমনে থাকতে পারেন। কারণ খাবার খাওয়ার পর হজম প্রক্রিয়ার জন্যও এনার্জির ক্ষয় হয়। উপোস চলাকালীন দেহে বেশ কিছু উপকারী হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়।

সাবধানতা কোথায়

পুষ্টিবিদদের মতে, যত বেশি উপোস করা হবে, তত বেশি ওজন কমবে— এই বক্তব্য সত্য নয়। ২৪ বা ২৪ ঘণ্টার বেশি উপোস করলে তা শরীরের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যে সমস্ত মহিলারা হরমোনের তারতম্যের শিকার, যাঁরা অন্তঃসত্ত্বা বা সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করাচ্ছেন, তাঁদের বেশি উপোস করা উচিত নয়। উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবিটিস থাকলে, সে ক্ষেত্রেও বেশি উপোস করা ঠিক নয়।

উপোস করতে হলে

১) প্রথমে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপোস শুরু করা উচিত।

২) উপোস করার সময়ে শরীরের ক্লান্তি এবং অন্যান্য উপসর্গের প্রতি সচেতন থাকা উচিত।

৩) শারীরিক অসুস্থতা বা কোনও রোগে আক্রান্ত থাকাকালীন উপোস করা উচিত নয়।

৪) উপোস করার পর কোনও সমস্যা বোধ হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সব শেষে বলা যায়, ‘রোগা হওয়ার সহজ উপায়’ শুধুই উপোস নয়! সঠিক জীবনধারা, ডায়েট, সঠিক পুষ্টি এবং জলের সামঞ্জস্যের সঙ্গে মিলিয়ে উপোস করলে তবেই ভাল ফল পাওয়া সম্ভব। চটজলদি সমাধানে আসায় সাময়িক ফল পেলেও, দীর্ঘকালীন উপোসে যে হিতে বিপরীত হতে পারে, তা খেয়াল রাখা দরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement