Ideal Meal Count

৩ না কি ২? কত বার খাবার খান দিনে? তার উপরেও নির্ভর করে ডিমেনশিয়া, কিডনির রোগের ঝুঁকি!

দিনে কত বার ভরপেট খাওয়া উচিত, সে সংখ্যা নিয়ে ধন্দ রয়েছে অনেকের মনেই। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে দিনে কত বার পূর্ণাঙ্গ খাওয়াদাওয়ার প্রয়োজন? এখানেই প্রশ্ন ওঠে, দিনে তিন বার খাওয়ার তুলনায় কি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ভাল?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৩৪
Share:
How many meals we need in a day to maintain weight and avoid health issues, according to a doctor

দিনে কত বার খাবার খাওয়া উচিত? ছবি: সংগৃহীত।

সকালে জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়েন কাজে, দুপুরে কাজে বিরতি নিয়ে মধ্যাহ্নভোজন, রাতে বাড়ি ফিরে সকলে মিলে রাতের খাবার। মাঝে টুকটাক মুখ চালানো তো আছেই। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ খাওয়াদাওয়া, যাকে ইংরেজিতে বলে ‘মিল’, তা সাধারণত তিন বারই করা হয় গোটা দিনে। কারও ক্ষেত্রে সেটি দুই, কারও চার, কারও বা আবার এক। মিলের সংখ্যা নিয়ে ধন্দ রয়েছে অনেকের মনেই। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে দিনে কত বার পূর্ণাঙ্গ খাওয়াদাওয়ার প্রয়োজন? এখানেই প্রশ্ন ওঠে, দিনে তিন বার খাওয়ার তুলনায় কি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ভাল?

Advertisement

ক্যালিফোর্নিয়ার ‘সাল্ক ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজিক্যাল স্টাডিজ়’-এর গবেষক এমিলি মানুগিয়ান তাঁর বই ‘হোয়েন টু ইট’-এ দাবি করেছিলেন, আমাদের শরীরকে ১২ ঘণ্টার বিরতি দেওয়া খুব দরকার, যখন খাবার প্রবেশ করবে না। এই সময়ে পরিপাকক্রিয়ার যন্ত্রগুলি বিশ্রাম নেয়। আমেরিকার উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের‘স্কুল অফ মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’-এর সহযোগী অধ্যাপক রোজ়ালিন অ্যান্ডরসনের মতে, শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখলে প্রদাহজনিত রোগের সংখ্যা কমে। ইটালির ‘ইউনিভার্সিটি অফ পাডোভা’র ব্যায়াম ও ক্রীড়া বিভাগের অধ্যাপক আন্তোনিও পাওলি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের কাছে যা তথ্য রয়েছে, তাতে নৈশভোজ সন্ধ্যার মধ্যেই করে ফেললে শরীর ভাল থাকে। কারণ, এর ফলে উপবাসের সময়কাল বৃদ্ধি পায়। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি একাধিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এ ভাবে।’’

How many meals we need in a day to maintain weight and avoid health issues, according to a doctor

রাতে কটার সময়ে নৈশভোজ করবেন? ছবি: সংগৃহীত।

দিশা দেখালেন পুষ্টিবিদ মারিসা কাই মিলুক। তাঁর কথায়, ‘‘খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সংখ্যা বেঁধে দেওয়া মুশকিলের। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘন ঘন অল্প অল্প করে খাওয়া এবং একবারে ভরপেট খাওয়া, দুইয়েরই উপকারিতা রয়েছে। তিন বার পূর্ণাঙ্গ খাওয়াদাওয়ার কথা সাধারণত বলা হয় তার কারণ, প্রয়োজনীয় ক্যালোরি সারাদিন ধরে ভাগে ভাগে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।ভরপেট খাওয়ার সংখ্যা কমিয়ে দিলে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি একবারে অনেকখানি গ্রহণ করতে হয়। তাতে অন্য সমস্যা।’’

Advertisement

কলকাতার মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডলও একই ভাবে তিন বার ভরপেট খাওয়াদাওয়া করার সমর্থক। আনন্দবাজার ডট কমকে তিনি বলেন, ‘‘কিটো ডায়েট বা এই কৃচ্ছসাধনকে আমি কখনও সমর্থন করি না। আমি নিজের অনেক রোগীকে দেখেছি, এই ধরনের কঠিন ডায়েট করার ফলে তাঁদের শরীরে ক্রিয়েটিনিন, ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। পেশি দুর্বল হয়ে যায়। শরীরে গ্লুকোজ়ের ঘাটতি নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি করে। এমনকি, কিডনির অসুখ বা ডিমেনশিয়াও হতে পারে এর ফলে। তাই আমরা তিনটি মিলের পরামর্শই দিই সকলকে।’’

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের পরামর্শ না দিলেও চিকিৎসক সন্ধ্যার মধ্যে নৈশভোজ সেরে নেওয়ার কথা বলছেন। এর ফলে আপনাআপনিই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হয়ে যাচ্ছে। এর বেশ কয়েকটি উপকারিতাও রয়েছে। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘রাত ৮টার মধ্যে খাওয়াদাওয়া শেষ করে ফেলা উচিত। পরদিন সকালে উঠে জলখাবার যদি ৮টা নাগাদ করেন, তা হলেই ১২ ঘণ্টার বিশ্রাম পেয়ে যাচ্ছে শরীর। মাথায় রাখতে হবে, কোনও মিলেই যেন অতিরিক্ত খাবার পেটে না পড়ে। সারা দিনে মোট ১৪০০ থেকে ১৬০০ কিলো ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। সেটার হিসাব করে তিনটি মিলে ভাগ করে নিলে সবচেয়ে ভাল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement