ডিম সেদ্ধ না ওমলেট— কী ভাবে খাওয়া ভাল? ছবি: সংগৃহীত।
সকালের খাবারটা স্বাস্থ্যকর হওয়া দরকার, বলেন পুষ্টিবিদেরা। সেই মতোই খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবারের সমন্বয় রেখেই খাওয়াদাওয়া করেন? পাতে থাকে ডিমও। কিন্তু সেদ্ধ খান, না ওমলেট? স্বাদের দিক দিয়ে বিচার করলে অনেকেই সেদ্ধ ডিমের চেয়ে ওমলেটকেই এগিয়ে রাখবেন। পেঁয়াজ, লঙ্কা কুচি দিয়ে ডিমভাজা খুদে থেকে বড় সকলেই ভালবাসেন। কেউ আবার ডিম সেদ্ধ বা অর্ধ সেদ্ধ খেতেই পছন্দ করেন। তবে সেদ্ধ বা ওমলেটে ডিমের পুষ্টিগুণের তফাত হয় কোনও?
সেদ্ধ ডিমের পুষ্টিগুণ
অনেকেই বলেন, তেলে ভেজে ডিম খাওয়ার চেয়ে সেদ্ধ খাওয়াই ভাল। কিন্তু সেদ্ধ ডিমে কি সত্যি পুষ্টিগুণ ওমলেটের চেয়ে বেশি? ইউনাইডেট স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) বলছে, সেদ্ধ ডিমে (হার্ড বয়েলড) উচ্চমাত্রার ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। আর পাওয়া যায় ভিটামিন বি১২, এ, ডি, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগমেশিয়ামের মতো খনিজ। ডিমে থাকা প্রোটিন পেশি গঠনে সাহায্য করে। এ ছাড়াও এতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। একটি সেদ্ধ ডিমে ক্যালোরির পরিমাণ থাকে ৭৮।
ওমলেটের পুষ্টিগুণ: উচ্চ তাপমাত্রায় তেলে ভাজলে ডিমের পুষ্টিগুণ কিছুটা নষ্ট হয়, বলছেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। ওমলেট নানা ভাবে খাওয়া হয়। কেউ বেশি পরিমাণে তেলে ভাজেন। তার মধ্যে পেঁয়াজ, লঙ্কা দিয়ে খান। কেউ আবার পালং শাক, মুরগির মাংস যোগ করেন। কেউ খান মাখনে ভেজে, চিজ় দিয়ে। ভাজাভুজি খাওয়া কতটা স্বাস্থ্যকর?
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন,‘‘পুষ্টিগুণের দিক থেকে আমি সেদ্ধ ডিমকেই এগিয়ে রাখব। সঠিক তাপমাত্রায় ডিম সেদ্ধ করে খেলে ডিমের প্রোটিন ঠিক থাকে। শরীর শোষণ করতে পারে। অপচয় হয় না। তবে উচ্চ তাপমাত্রায় ডিম ভাজার ফলে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। এতে প্রোটিন ভেঙে যায়। ফলে প্রোটিন ঠিক ভাবে শরীর শোষণ করতে পারে না। ভাজা ডিম খেতে ভাল হলেও উপকারিতার দিক বিচার করলে সেদ্ধ ডিমই খাওয়া ভাল।’’
বেছে নেবেন কোনটি?
সেদ্ধ ডিমের সঙ্গে যে হেতু কিছু মেশানো হচ্ছে না তাই এতে ক্যালোরির পরিমাণ নির্দিষ্ট। প্রোটিনও ভরপুর মাত্রায় পাওয়া যায়। তবে যদি কেউ ডিম খেয়ে পেট ভরাতে চান তা হলে বেছে নিতে পারেন ওমলেট। ওমলেটের সঙ্গে বিভিন্ন রকমের সব্জি যোগ করলে তার পুষ্টিগুণ, ক্যালোরি বৃদ্ধি পাবে। ওজন বশে রাখতে চাইলে মাখন, চিজ় বাদ দিয়ে অল্প তেলে ওমলেট খেতে পারেন।
তবে ডিমের পু্ষ্টিগুণ বজায় রাখতে হলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তা রান্না করা জরুরি। অতিরিক্ত তাপে বা তেলে রান্না করলে ডিমের পুষ্টিগুণ নষ্ট হবে। ওমলেট খেলেও তা কম তেলে এবং কম তাপমাত্রায় করতে হবে। একই সঙ্গে পুষ্টিবিদ বলছেন, ডিম সেদ্ধ করার ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি প্রযোজ্য। অতিরিক্ত সেদ্ধ হয়ে গেলে প্রোটিনের পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় না। আবার অর্ধতরল কুসুমের ডিম খাওয়া খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। তাই ডিম সুসেদ্ধ হতে হবে, তবে অতিরিক্ত সেদ্ধ নয়।