Anger Management

কথায় কথায় রেগে আগুন? চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় করেন? জেনে নিন মাথা ঠান্ডা রাখার সহজ কৌশল

যখন তখন রাগ যেমন সংসারে বা কর্মক্ষেত্রে অশান্তি ডেকে আনে, তেমন মারাত্মক শারীরিক ক্ষতি হয় রাগি মানুষটির। রাগ দমন করার উপায় রপ্ত করা যায় কী করে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ১৭:০৯
Share:
Best anger management strategies to help you calm down

রাগ কমাবেন কী করে, জেনে নিন সহজ কৌশল। ছবি: ফ্রিপিক।

রাগলে আর মাথার ঠিক থাকে না? আপনি কি রেগে গেলেই একেবারে দুর্বাশা মুনি? রাগের মাথায় ভুলভাল কাজকর্ম করেন, যাতা কথা বলে পরে নিজেই পস্তান? বোধবুদ্ধি একেবারেই লোপ পায়। চিৎকার-চেঁচামেচিতে বাড়ি মাথায় করে ফেলেন।

Advertisement

রাগ খুব খারাপ জিনিস। সাময়িকভাবে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় রক্তচাপ। ধকল পড়ে স্নায়ুর ওপরে। এর প্রভাব যতটা মনে হয়, ততটাই শরীরে। মনোবিদেরা তাই বলেন, রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। রাগ করে নিজের রক্তচাপ রকেটের গতিতে না বাড়িয়ে বরং রাগ আয়ত্ত্বে রাখার উপায় শিখুন।

অল্পেই মাথা গরম হয়ে যায় যাঁদের, তাঁরা বিভিন্ন রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন। মনোবিদেদের মতে, প্রচণ্ড রাগ, মানসিক উত্তেজনা, উদ্বেগে ভুগলে কম বয়সেই রক্তচাপের তারতম্য হতে থাকে। হঠাৎ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে রক্তচাপ। এর থেকে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ইস্কিমিক হার্টের রোগের সম্ভাবনাও বাড়ে।

Advertisement

রাগ কার না হয়! কিছু ক্ষণের জন্য উত্তেজনা, চেঁচামেচি আর তার পর সব ঠান্ডা, এমন হলে তা’ও এক রকম, কিন্তু যদি ঘন ঘন মেজাজ বিগড়ে যেতে থাকে, উত্তেজনা ও উদ্বেগ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা হলে চিন্তার কারণ আছে। প্রচণ্ড মাথাগরম হয়ে গেলে, কী ভাবে মাথা ঠান্ডা রাখবেন তার উপায় বের করতে হবে আপনাকেই। তার কিছু সহজ কৌশলও আছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

রাগ কমানোর সহজ টোটকা

১. রাগ হচ্ছে বুঝলে চুপ করে যান। অহেতুক কথা বাড়াবেন না, এতে সমস্যা বাড়বে।

২. সে জায়গা থেকে সরে হেঁটে আসুন কিছু ক্ষণ। ঘরের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। কারও সঙ্গে কথা বলে মাথা ঠান্ডা করুন।

৩. মাথা গরম হচ্ছে বুঝলেই কানে হেডফোন গুঁজে পছন্দের গান শুনুন। এতে মাথা ঠান্ডা হবে অনেকটাই।

৪. কী কারণে আপনি রেগে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে কী ভাবে সমস্যার সমাধান হবে, তা নিয়ে মনোযোগী হোন। অন্যের নিন্দা বা সমালোচনা না করে নিজের পছ্ন্দ-অপছন্দ পরিষ্কার করে জানান। নির্দিষ্ট করে আপনার চাহিদাটা বলুন।

৫. পছন্দের কাজ করুন। ছবি আকুঁন, ছবি তুলতে ভাল লাগলে তাই করুন। গল্পের বই পড়ার চেষ্টা করুন। বাগান করার শখ থাকলে খুবই ভাল। দেখবেন মন ভাল হয়ে যাবে।

৬. ক্ষমা করতে শিখুন। মনের মধ্যে রাগ পুষে রেখে সব সময় খারাপ কথা ভাবলে আখেরে ক্ষতি আপনারই। নিজের এই একপেশে চিন্তায় ডুবে থাকলে ভাল কিছু ভাবার ক্ষমতাটাই না চলে যায়!

৭. যদি দেখেন রাগ কিছুতেই কমছে না, তা হলে কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। গভীর ভাবে শ্বাস টানুন, কিছু ক্ষণ ধরে রেখে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। ৩ থেকে মিনিট ৫ মিনিট করলেই, দেখবেন মাথা অনেকটা ঠান্ডা হয়েছে। যোগাসন, মেডিটেশন করলে মনের চাপ ও উদ্বেগ কমে যায়।

৮. মনে যে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার থেকে যদি বেরিয়ে আসতে সমস্যা হয়, তা হলে অন্য কিছুতে মন দিন। যদি সাজগোজ পছন্দ হয়, তা হলে পছন্দের জামাকাপড় পরুন। এতেও মন ভাল হয়ে যাবে।

৯. মনের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কমাতে হাসিঠাট্টার জুড়ি মেলা ভার। যখনই বুঝবেন রাগ মাথায় চেপে বসছে, সঙ্গে সঙ্গে হাসির কোনও কথা বা দৃশ্য ভাবার চেষ্টা করুন। মজার আড্ডা দেওয়ার চেষ্টা করুন। বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজব করুন, নিজের মানসিক উত্তেজনার কথা জানান। দেখবেন, মন অনেকটা হাল্কা লাগছে।

১০. পছন্দের খাবার খেলেও মন ভাল হয়ে যায় অনেক সময়ে। রাগের পারদ চড়তে শুরু করলে মুখে একটা চকোলেট পুরে দিন। অথবা পছন্দের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাতেও কাজ হয় অনেক সময়।

এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। রাগ, মাথা গরম, উত্তেজনা অসুখের পর্যায়ে চলে যায় অনেকেরই। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে এবং আপনার রাগের কারণে অন্যের ক্ষতি হচ্ছে বুঝলে, দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement