হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন তসলিমা নাসরিন। — ফাইল ছবি।
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তসলিমা নাসরিন। নিজেই এ কথা ফেসবুকে জানিয়েছেন লেখিকা। বাড়ি ফেরার পর প্রথম পোস্টের ছত্রে ছত্রে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে। সেই পোস্টের একেবারে শুরুতে লিখেছেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে হাসপাতাল থেকে পঙ্গুত্ব কিনে বাড়ি ফিরলাম।’’
লেখিকা ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, পড়ে গিয়ে তিনি ব্যথা পেয়েছেন হাঁটুতে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করিয়ে চিকিৎসকরা তাঁর হিপ রিপ্লেসমেন্ট করেছেন। এমনই দাবি বাংলাদেশে চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা তসলিমার। চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফেরার পর প্রথম পোস্টে তসলিমা তুলে ধরেছেন এই সংক্রান্ত ঘটনাবলির পুরোটা।
ফেসবুকে লেখিকার দাবি, শুক্রবার তিনি হাঁটুতে চোট পান। সে দিনই চিকিৎসকেরা তাঁর এক্সরে করিয়ে জানান যে তসলিমার হিপ ভেঙেছে। তা বদলাতে হবে। সেই মতো শনিবার দুপুরে তাঁর ‘টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট’ হয়। ফেসবুকে লেখিকার দাবি, রিপোর্টে লেখা ছিল, পুরনো একটি আঘাত রয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যা নিজে নিজেই সেরেও গিয়েছে। তসলিমা লিখেছেন, ‘‘হিল হয়ে যাওয়া পুরনো ফ্র্যাকচারকে আঁকড়ে ধরে তারা শনিবার দুপুরেই আমার টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট করে দিল।’’
এর পরে লেখিকা লিখছেন, ‘‘সবচেয়ে হাস্যকর জিনিস, ইমারজেন্সিতে গিয়ে আমি যা বলেছি, আমার হাঁটুর ব্যথার কথা, সেটি সম্পূর্ণ ডিলিট করে দিয়ে ডিসচার্জের সময় নতুন করে হিস্ট্রি লিখে দিয়েছে, যেখানে হাঁটু শব্দটিই নেই, আছে হিপ হিপ হিপ। আমি নাকি হিপ জয়েন্টের যন্ত্রণায় কাতরেছি, আমার হিপ জয়েন্ট নাকি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। বাহ, কী সুন্দর হিস্ট্রি পাল্টে দেওয়া হলো। মূল হিস্ট্রি গায়েব।’’
নিজের বাড়ি ফেরার পোস্টের শেষের দিকে হতাশার কথা ফুটে উঠেছে ‘লজ্জা’র স্রষ্টার কলমে। সেই সঙ্গেই লিখেছেন আশার কথাও। তসলিমা লিখেছেন, ‘‘আমার হিপ জয়েন্ট আর ফিমার গেছে চিরতরে, আমার জীবন আর আগের জীবন নেই, আমার চলাফেরা শ্লথ হবে যদি কোনও দিন হাঁটতে পারি, স্থবির জীবনে অজস্র রোগশোক এসে বাসা বাঁধবে, কিন্তু আপাতত বেঁচে তো আছি। এইবা কম কিসে!’’
তসলিমার দাবি, চিকিৎসা বিভ্রাটের ফাঁদেই পা দিয়ে পস্তাচ্ছেন তিনি। তাঁর মতে, নিজে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও তিনি বুঝেও কিছুই করে উঠতে পারেননি।