Pregnancy Pillow Benefits

অন্তঃসত্ত্বাদের কোন কাজে লাগে ‘প্রেগন্যান্সি পিলো’? কেনার আগে জেনে নিন তা কত ধরনের হয়

এ দেশে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বিশেষ ধরনের বালিশ ব্যবহারের চল না থাকলেও বিদেশে কিন্তু কয়েক যুগ আগে থেকেই হবু মায়েদের প্রেগন্যান্সি পিলো ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩৯
Share:

বিশেষ ধরনের এই বালিশে শুলে বাড়তি আরাম পান হবু মায়েরা। ছবি: সংগৃহীত।

খোলের ভিতর তুলো ভরা, নরম, চারকোনা একটা বালিশ! তার উপর মাথা না রাখলে নিশ্চিন্তে ঘুম আসে না। লম্বা, গোলাকার পাশবালিশটি জড়াতে না পারলেও ঘুমোতে পারেন না অনেকে। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু আলাদা।

Advertisement

পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বন্ধু, সহকর্মী রাতে কিছুতেই ঘুমোতে পারছেন না। শারীরিক অস্বস্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রায় গোটা রাতই জেগে কাটাতে হচ্ছে তাঁকে। অথচ পাশের মানুষটি নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন। রাতের পর রাত এমন ঘটলে হবু মায়ের মনের উপরেও প্রভাব পড়ে। অথচ, সন্তানধারণের একেবারে প্রথম দিকে বিছানায় শুতে তেমন সমস্যা ছিল না। তবে দিন যত এগিয়ে আসছে, শারীরিক অস্বস্তি তত বাড়ছে। স্ফীতোদর নিয়ে বসতে, শুতেও সমস্যা হচ্ছে। তার উপর সারা শরীরে ব্যথা-বেদনা থাকলে তো কথাই নেই। অথচ, এই সময়ে হবু মা এবং ভ্রূণের স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। অন্তঃসত্ত্বাদের এই ধরনের শারীরিক অস্বস্তির কথা মাথায় রেখে বিশেষ ধরনের কিছু বালিশ তৈরি করছে বালিশ প্রস্তুতকারী সংস্থা। দিনে দিনে সেগুলি বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠছে। বিশেষ ধরনের এই বালিশের পোশাকি নাম ‘প্রেগন্যান্সি পিলো’। অনেকের কাছে তা ‘ম্যাটারনিটি পিলো’ বলেও পরিচিত।

এ দেশে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বিশেষ ধরনের বালিশ ব্যবহারের চল না থাকলেও বিদেশে কিন্তু কয়েক যুগ আগে থেকেই হবু মায়েদের প্রেগন্যান্সি পিলো ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হত। হলিউডের বিভিন্ন ছবিতেও সে প্রমাণ মেলে। বলা যায়, সেখান থেকেই বিশেষ ধরনের বালিশ ব্যবহার করা এখন এ দেশে প্রায় ‘ট্রেন্ড’-এ পরিণত হয়েছে।

Advertisement

প্রেগন্যান্সি পিলো ব্যবহার করলে কী লাভ হয়?

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দেহের ওজন বাড়ে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে কোমর, পিঠের ব্যথা। সহজে নড়াচড়া করা যায় না। একটানা বসে বসে দেহের নীচের অংশে অসাড় ভাবও দেখা দিতে পারে। এমনকি রাতে বিছানায় শুতেও সমস্যা হয়। প্রেগন্যান্সি পিলো এই সমস্ত সমস্যার মুশকিল আসান হয়ে উঠতে পারে।

কত ধরনের বালিশ হয়?

‘ম্যাটারনিটি পিলো’ বা ‘প্রেগন্যান্সি পিলো’-র রকমফের রয়েছে। কে কী ধরনের বালিশ কিনবেন, তা নির্ভর করে ওই মহিলার শারীরিক গঠন, সুবিধা-অসুবিধা এবং শোয়ার ধরনের উপর। অন্তঃসত্ত্বাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাজারে বিভিন্ন ধরনের বালিশ পাওয়া যায়।

এই ধরনের বালিশ কেনার আগে কী কী মাথায় রাখবেন?

১) অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার মাঝামাঝি সময় থেকে প্রসবের আগে পর্যন্ত উদর আরও ভারী হয়ে ওঠে। শুতে, বসতেও সমস্যা হয়। যাঁদের সমস্যা মূলত কোমর কিংবা তলপেট নিয়ে, তাঁরা ‘ওয়েজ পিলো’ ব্যবহার করতে পারেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বহু মহিলাই বাড়ি থেকে কাজ করেন। একটানা বসে থাকলে পিঠ, কোমরে ব্যথা হয়। বিশেষ এই আকৃতির বালিশটি ব্যবহার করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

যে কোনও এক পাশ ফিরে শোয়ার জন্য চাই ‘সি-শেপ পিলো’। ছবি: সংগৃহীত।

২) এই সময়ে সোজা হয়ে শোয়া মুশকিল। স্ফীতোদর নিয়ে বিছানায় পাশ ফিরে শুতে গেলেও অনেকের সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে ‘সি-শেপ পিলো’ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই বালিশটি দেখতে অনেকটা ইংরেজি অক্ষর ‘সি’-এর মতো। যে কোনও এক পাশে এই বালিশ রাখলে আরামে ঘুমোতে পারা যায়। পেটের অতিরিক্ত ভার অনেকটাই লাঘব করে বিশেষ এই আকৃতির বালিশটি।

চিত হয়ে শুলে পিঠ, কোমরে আরাম দিতে পারে ‘ইউ-শেপ পিলো’। ছবি: সংগৃহীত।

৩) ‘সি’-এর মতো ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষরের মতো বালিশও পাওয়া যায়। যাকে বলা হয় ‘ইউ- শেপ পিলো’। যাঁদের সারা দেহে ব্যথা, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওজন অনেকটা বেড়ে গিয়েছে, তাঁদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ভাবে এই বালিশটি তৈরি করা হয়েছে। ‘ইউ’ আকৃতির বালিশ পাশে থাকলে, চিত হয়েও শুতে পারা যায়।

এই ধরনের বালিশ ব্যবহার করার কি নির্দিষ্ট কোনও সময় আছে?

চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রেগন্যান্সি পিলো ব্যবহার করার এমন কোনও নিয়ম নেই। তবে সন্তানধারণ করার একেবারে শুরুর দিকে এই ধরনের বালিশের খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। মোটামুটি ২০ সপ্তাহ পর, অর্থাৎ যে সময় থেকে হবু মায়েদের শারীরিক গঠন এবং ওজনে পরিবর্তন আসতে শুরু করে, সেই সময়ে অস্বস্তি এড়াতে প্রেগন্যান্সি পিলো ব্যবহার করাই যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement