কী ভাবে বিপদ এড়াতে পারতেন শ্রীময়ী? ছবি: শাটারস্টক।
গরমে ডিহাইড্রেশন হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টোরাজ। শহরের তাপমাত্রায় ইতিমধ্যেই ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। কিন্তু পেশার তাগিদে বহু মানুষকে ভরদুপুরের গনগনে রোদেও বাইরে বেরোতে হচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই পরিস্থিতির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে মারাত্মক সমস্যা— হিট স্ট্রোক এবং ডিহাইড্রেশন। অভিনেত্রী আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, সিরিয়ালের শুটিং সারতে নিয়মিত রোদে বেরোতেই হত তাঁকে। গরমের কারণেই এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অভিনেত্রী হোন কিংবা অফিসকর্মী, পেশার তাগিদে বহু মানুষকে ভরদুপুরের গনগনে রোদেও বাইরে থাকতে হয়। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, অসহ্য গরম থেকে এখনই নিস্তার নেই। তাই শরীরে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি থেকেই যায়! অনেক সময়েই দেখা যায়, পথেই অসুস্থ বোধ করায় কেউ কেউ বসে পড়েন বা অনেক সময়ে জ্ঞানও হারান। কেউ আবার পুরোপুরি জ্ঞান না হারালেও, অতিরিক্ত দুর্বলতার জন্য উঠে দাঁড়ানোর শক্তি পান না। শরীরে অসম্ভব অস্থিরতা শুরু হয়, অনেকের ক্ষেত্রেই শুরু হয় বমি, পেশিতে খিঁচুনিও আসে। কাঠফাটা গরমে এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে অনেকেরই। পাত্তা দেন না বেশির ভাগ মানুষ। নিয়মিত এই সব লক্ষণকে পাত্তা না দেওয়ার ফল কিন্তু ভুগতে হতেই পারে। কারণ, এ সবই হয়তো হচ্ছে ডিহাইড্রেশনের কারণে। নিয়মিত যা চলতে থাকলে রক্তচাপ ও রক্তের শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে সমস্যা বা আচমকা সংজ্ঞা হারানোর মতো বিপত্তিতে পড়তে হতে পারে। ঠিক যেমনটা হয়েছে অভিনেত্রী শ্রীময়ীর।
জলের অভাব হলে শরীর নিজে থেকেই সেই সঙ্কেত দেয় আমাদের। ছবি: শাটারস্টক।
কী ভাবে বুঝবেন ডিহাইড্রেশন হয়েছে?
জলের অভাব হলে শরীর নিজে থেকেই সেই সঙ্কেত দেয় আমাদের। সেই লক্ষণগুলি চিনতে পারলেই বোঝা যাবে যে, শরীরে জলের অভাব মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘ডিহাইড্রেশন হলে গলা শুকিয়ে যেতে থাকে অনবরত। তেষ্টা পায় ঘনঘন। প্রস্রাব কমে যায়। ক্লান্তি চেপে বসে শরীরে। শুকনো হয়ে যায় ত্বক। ঝিমুনি, সামান্য কারণেই বিরক্তির মতো কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। মাত্রাতিরিক্ত ডিহাইড্রেশনের ক্ষেত্রে সংজ্ঞা হারানো, বুক ধড়ফড়, দ্রুত শ্বাস, নিম্ন রক্তচাপের মতো নানা সমস্যা হয়। এই রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।’’
কী ভাবে রেহাই পাবেন?
গরমে শরীরে যাতে জলের জোগান না কমে, সে দিকে নজর রাখতে হবে। জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ দেখলেই নুন-চিনির শরবত কিংবা ওআরএস খেতে পারেন। দিনে কয়েক বার তা খেলে শরীর অনেকটাই ঠিক লাগবে শরীর। ডিহাইড্রেশনে আক্রান্ত হলে মুখে বারবার জলের ঝাপটা দিলে ও ভিজে তোয়ালে শরীরে জড়িয়ে রাখলেও খানিকটা সুস্থ বোধ হয়। ডিহাইড্রেশনের ফলে শুধু জল নয়, শরীরে খনিজ পদার্থেরও অভাব তৈরি হয়। তাই ঘোল বা লস্যি এবং ডাবের জলের মতো পানীয় খেতে হবে। এ ছাড়া, ইলেক্ট্রোলাইট রয়েছে এমন স্পোর্টস ড্রিঙ্কসেও ভাল কাজ হয়। ডিহাইড্রেশনে পটাশিয়ামের যে অভাব হয়, কলা তা খানিকটা পূরণ করতে পারে। অতিরিক্ত চা-কফি খেলে শরীরে জলের অভাব তৈরি করে। ভাজাভুজি খাবার বেশি খেলেও ডিহাইড্রেশন হয়। বিশেষত গরমে এগুলি তাই এড়িয়ে চলাই বাঞ্ছনীয়।