২৪ বছর ধরে ডায়াবিটিসের সঙ্গে লড়াই করছেন অভিনেতা ফাওয়াদ খান। ছবি: সংগৃহীত।
১৭ বছর বয়স থেকে টাইপ ১ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত অভিনেতা ফাওয়াদ খান। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। ডায়াবিটিস একেবারেই বার্ধক্যজনিত রোগ নয়। অল্পবয়সিদেরও এই রোগ হতে পারে, সে বিষয় সাবধান করেছেন অভিনেতা। ডায়াবিটিস ধরা পড়ার পর ফাওয়াদের শরীরে কী কী পরিবর্তন এসেছিল, তা নিয়েও কথা বলেন তিনি। ফাওয়াদ জানান, ‘‘১৭ বছর বয়সে আমার ডায়াবিটিস ধরা পড়ে। এক বার আমার প্রচণ্ড জ্বর আসে। সেই সময় আট দিনের মাথায় আমার প্রায় ১০ কেজি ওজন কমে যায়। দিনে ছয় থেকে সাত লিটার জল খেয়েও আমার তেষ্টা মিটত না, ঘন ঘন প্রস্রাব শুরু হয়, শরীরে জলের ঘাটতি শুরু হতে শুরু করে।’’
ডায়াবিটিস বার্ধক্যজনিত রোগ নয়। ছবি: সংগৃহীত।
১৭ বছর বয়স থেকে ইনসুলিন নেন ফাওয়াদ। এখন তাঁর বয়স ৪১ বছর। ২৪ বছর ধরে ডায়াবিটিসের সঙ্গে লড়াই করছেন অভিনেতা। অভিনেতা বলেন, ‘‘খেলাধুলো করতে আমি খুব ভালবাসতাম। স্কুলে স্পোর্টসের সব খেলাতেই আমি নাম দিতাম। তবে ডায়াবিটিস হওয়ার পরে আমার খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ একেবারে কমে যায়। প্রথম তিন-চার মাস আমার খুবই ক্লান্ত লাগত, কোনও কাজ করতেই ইচ্ছে করত না।’’
ডায়াবিটিস রোগ মূলত দু’ধরনের হয় টাইপ ১ ও টাইপ ২। টাইপ ১ ডায়াবিটিস মূলত জিনগত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অনেক বেশি দেখা যায়। অপর দিকে টাইপ ২ ডায়াবিটিস খাদ্যাভ্যাস বা ওজন সংক্রান্ত কারণে হওয়ার সম্ভবনা থাকে, যার লক্ষণ ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।
টাইপ ১ আর টাইপ ২ ডায়াবিটিসের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
টাইপ ১ ডায়াবিটিস কী?
টাইপ ১ ডায়াবিটিসকে অটোইমিউন রোগ বলা হয়। অগ্ন্যাশয়ে অবস্থিত ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাওয়ার ফলে যখন মানুষের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়, সে অবস্থাকে টাইপ ১ ডায়াবেটিস বলা হয়।
টাইপ ২ ডায়াবিটিস কী?
টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয়ে অবস্থিত ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয় না। কিন্তু শরীর ইনসুলিন গ্রহণে বাধা দেয়। অন্য ভাবে বলা যায়, টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে মানুষের শরীর ইনসুলিনের পূর্ণ ব্যবহার করতে অক্ষম হয়ে যায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক হারে বেড়ে যায়।
জীবনধারায় সামান্য বদল আনলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের মোকাবিলা করা সম্ভব। তবে টাইপ ১ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে ‘ইনসুলিন রিপ্লেসমেন্ট’ অর্থাৎ, বাইরে থেকে শরীরে ইনসুলিন দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই শিশুদের শরীরে ডায়াবিটিসের উপসর্গগুলি দেখা দিলেই সতর্ক হোন।