ছোটদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতাও ধীরে ধীরে বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত।
বয়স বেশি নয়, এখন থেকেই রক্তচাপ বাড়তির দিকে। যত বারই চিকিৎসকের কাছে রুটিন ‘চেকআপ’ করাতে নিয়ে যান, তত বারই এক ঘটনা। বলছিলেন বছর দশেকের রৌনকের মা। “ডাক্তারের কাছে আসছে বলে ভয়ে এমনটা হয় নাকি, বুঝতে পারি না। প্রতি বারই ডাক্তারবাবু বলেন, এই বয়সে রক্তচাপ যতটা থাকার কথা, তার চেয়ে বেশিই রয়েছে।” এই ধরনের সমস্যা শুধু রৌনকের বয়সিদের নয়, বয়ঃসন্ধির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোর-কিশোরীদেরও হতে পারে। আর এই প্রবণতাই অল্প বয়সে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। সাম্প্রতিক গবেষণা অন্তত তেমনটাই বলছে। গোটা বিশ্বে ১৫ জনের মধ্যে অনন্ত এক জন এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ছোটদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতাও ধীরে ধীরে বাড়ছে।
কানাডার অন্টারিয়োতে ১৯৯৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ২৫,৬০৫ জন শিশু, কিশোর-কিশোরীকে নিয়ে একটি সমীক্ষা করেন গবেষকেরা। এই সমীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছিল, তাদের প্রত্যেকেরই উচ্চ রক্তচাপের পূর্ব ইতিহাস রয়েছে। ১৩ বছর ধরে চলা এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ছোটদের মধ্যে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দু’টি রোগের ক্ষেত্রে অণুঘটকের মতো কাজ করে। প্রথমটি হল স্ট্রোক এবং দ্বিতীয়টি হল হার্ট অ্যাটাক। এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি ‘পেডিয়াট্রিক অ্যাকাডেমিক সোসাইটিস ২০২৪’ শীর্ষক সম্মেলনে উত্থাপন করা হয়।
ছোটদের ক্ষেত্রে ৯০/৬০ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ১২০/৮০ মোটামুটি এটিই স্বাভাবিক রক্তচাপ বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। কোনও কারণ ছাড়াই স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রায় হেরফের হলে এবং দীর্ঘ দিন ধরে তা একই ভাবে থাকলে, উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা রয়েছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। শুধু হার্ট বা মস্তিষ্ক নয়, উচ্চ রক্তচাপ কিন্তু অনেক জটিল রোগের ক্ষেত্রেই অনুঘটকের মতো কাজ করে। তাই বয়স কম হলেও নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন কানাডার ‘দ্য হসপিটাল ফর সিক চিল্ড্রেন’-এর নেফ্রোলজি বিভাগের চিকিৎসক ক্যাল এইচ. রবিনসন। তাঁর মতে, “অভিভাবকদের এই বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। না হলে পরবর্তী কালে গুরুতর সমস্যা হতে পারে।”