কাকলি ঘোষ, লায়ন্স ক্যালকাটা গ্রেটার বিদ্যামন্দির। ছবি:সংগৃহীত।
দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় থেকে বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রসারে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানেও সেই ধারা অক্ষুণ্ণ রেখেছে আনন্দবাজার অনলাইন তথা টেলিগ্রাফ। ইংরেজি বা অন্যান্য বিদেশি ভাষার জন্য বাংলা ভাষা যতই ক্ষীণধারা হয়ে পড়ুক না কেন, আনন্দবাজার অনলাইন-এর উদ্যোগ এবং পরিকল্পনায় আয়োজিত ‘শব্দ-জব্দ’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মাতৃভাষা আবারও সকলের চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষা ব্যবহারের এই মজার খেলায় উৎসাহ পেয়ে নিজেদের সুপ্ত প্রতিভা প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছে।
পড়ুয়াদের নিজস্ব আগ্রহ এবং স্কুলের উৎসাহে তাই গত দু’বার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল হয়েও লায়ন্স ক্যালকাটা গ্রেটার বিদ্যামন্দির বিজয়ীর স্থান অর্জন করে নিয়েছে। যে বঙ্গভাষাকে অবহেলা এবং কিছুটা তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা হয়, সেই ভাষাতেই এমন সাবলীল জয় মাতৃভাষার প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলতে অন্যান্য পড়ুয়াদেরও অনুপ্রাণিত করে। আমার মতে, প্রতিযোগিতাই উৎসাহের মূল মন্ত্র। মাতৃভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি উৎসাহী শিক্ষার্থীরা যে জানার নেশায় নিমজ্জিত হয়ে এই প্রতিযোগিতামূলক আনন্দে মেতেছে, তা আসলে বাংলার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই সাহায্য করবে।
আমরা আশা করব, বাংলা মাধ্যম স্কুলের পাশাপাশি বিগত বছরগুলির মতো এ বারও লায়ন্স ক্যালকাটা গ্রেটার বিদ্যামন্দির প্রথম স্থানাধিকারী হয়ে এই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করবে। এবং আবারও গর্বান্বিত হব আমরা। মাতৃভাষা চর্চার নেশা পড়ুয়াদের মধ্যে যাতে আরও গভীরে প্রোথিত হয় এবং তাদের এই অভিনব প্রতিযোগিতার জন্য উদ্যমী করে তোলে, সেই চেষ্টাই জারি থাকবে।
এ বারের প্রতিযোগিতাতেও আরও এক বার নজির গড়তে বদ্ধপরিকর আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা। গত এক বছর ধরে সে জন্য প্রস্তুতিও চলেছে জোরকদমে। বিভিন্ন ধরনের খেলার মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম করে রাখার যে প্রয়াস আনন্দবাজার অনলাইন ‘শব্দ জব্দ’ নিয়েছে, তা এই ভাষাচর্চার প্রয়াসকে অব্যাহত রাখবে। এই ধরনের প্রয়াস কেবলমাত্র প্রতিযোগিতামূলক স্তরে আবদ্ধ না রেখে যদি শিক্ষাক্ষেত্রের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তা হলে এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। বর্তমানে সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের যুগে নতুন প্রজন্মকে উদ্দীপ্ত করতে এই ধরনের প্রয়াস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।